স্বপ্নের পদ্মা সেতু : এবার মাওয়া প্রান্তে বসছে স্প্যান
পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে পাঁচটির পর এবার মাওয়া প্রান্তে স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা চলছে। তবে, বর্ষা মৌসুমে তীব্র স্রোতের কারণে এ প্রান্তে কাজ করা বেশ কঠিন হবে। তাই পরের স্প্যানগুলো বসতে বাড়তি সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, নদীতে পিলার বসানোর কাজ বিচ্ছিন্নভাবে চললেও একসঙ্গে পরপর ৬টি করে স্প্যান বসানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।
এক বৃত্তে ৫টি ফুলের মতো ফুটে আছে পদ্মা সেতুর ৫ স্প্যান। নদীর জাজিরা প্রান্ত যেন দৃশ্যমান পদ্মা সেতুর স্বপ্ন বুকে ধারণ করে অগ্রয়মান বাংলাদেশের এক অনন্য চেহারা।
তবে, ভিন্ন চিত্র মাওয়া প্রান্তে। শুরুতে এ প্রান্তকে ঘিরেই সাজানো হয় পরিকল্পনা। ৬ নম্বর পিলারের কাজও ধরা হয়। তবে, মাওয়া প্রান্তের ২২টি পিলারে মাটির তলদেশের গঠনগত জটিলতায় পাল্টে যায় সব।
আপাতত নকশা জটিলতার সমাধান মিলেছে। মাওয়ার ২, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের কাজের মধ্যে শেষ। এ পিলারগুলোর পাইল ক্যাপও বসানো হয়েছে। চাইলে যে কোনো দিন এ ৪টি পিলারের ওপর ৩টি স্প্যান বসিয়ে দেয়া সম্ভব।
এক্ষেত্রে কারিগরি জটিলতায় পরের স্প্যানগুলো বসাতে সময় বেশি লাগবে। কারণ, সেতুর ৪২টি পিলারের প্রতি ৬টিকে একটি মডিউল হিসেবে ধরে পুরো সেতুকে ৭টি ভাগে ভাগ করে চলছে কাজ।
সে হিসেবে সর্বশেষ ৭ নম্বর মডিউলের ৫টি স্প্যানের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন বিচ্ছিন্নভাবে স্প্যান না বসিয়ে একবারে একটি করে মডিউলের কাজ ধরা হবে।
পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, সাতটি মডিউলের কাজ একবারেই শেষ করতে হবে। মাঝখানে বিচ্ছিন্ন ভাবে বসায় দেয়া যাবে না। দুইটি স্প্যানের কাজ শেষ হয়নি এখনো। লোড পরীক্ষা করা হচ্ছে। এটা শেষ হলেই কাজ শুরু করা হবে।
১ নম্বর স্প্যানটি বসানো হয়েছিল যে ৩৭ নম্বর পিলারের ওপর, তার পাশেই ৩৬, ৩৫, ও ৩৪ নম্বর পিলারের কাজও শেষের দিকে। সব মিলে একসঙ্গে কাজ চলছে আরো ১০টি পিলারের।
সেতুর আকৃতি ইংরেজি ‘এস’ অক্ষরের মতো বাঁকানো হওয়ায় প্রতিটি স্প্যানের জন্য আলাদা ডিজাইন করতে হয়েছে। ইয়ার্ডে স্থান সঙ্কুলানের কথা বিবেচনা করে চীন থেকে সবগুলো স্প্যানের টুকরো দেশে এসে না পৌঁছায়, যে সব স্প্যানের কাজ শেষ। সেগুলো আগে বসানোর পরিকল্পনা সেতু কর্তৃপক্ষের।
সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নদীর পরিস্থিতি এবং আবহাওয়ার আচরণ সব কিছু মিলিয়ে কাজ করা হবে। গায়ের জোরে তো এটা সম্ভব নয়।
মাওয়ায় সেসব পিলারের নকশা জটিলতা পুরো শেষ হয় নি। সেগুলোতে এখন টেস্ট পাইলের কাজ চলছে। নকশা জটিলতা এবং নানা সমস্যার কথা বিবেচনা করে এতদিন কাজ হয়েছে সেতুর জাজিরা প্রান্তে। এই প্রান্তে ৫টি স্প্যান বসিয়ে দেয়ার পর এখন সবটুকু মনোযোগ মাওয়া প্রান্তের দিকে।
তবে, চলতি বর্ষা মৌসুমে তীব্র স্রোতের কারণে এই প্রান্তে কাজের গতি আনা সম্ভব না হলেও মাওয়া প্রান্তে বসানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে এক সঙ্গেই নদীর দুই প্রান্তেই দৃশ্যমান করা সম্ভব হবে পদ্মা সেতুর কাঠামো।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন