স্বামীকে ভালো কাজে আগ্রহী করতে স্ত্রীর করণীয়
নেকের কাজে উৎসাহ যোগাতে স্বামীর জন্য নেককার স্ত্রীর বিকল্প নেই। একজন স্ত্রী চাইলে তাঁর স্বামীকে কল্যাণের দিকে ধাবিত করতে পারে। নেককার স্ত্রীর অন্যতম গুণ এটি। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনটি ঘোষণা করেছেন। কিন্তু কীভাবে তা সম্ভব?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘বিয়ের জন্য দ্বীনদার/ধার্মিক মেয়েকে পছন্দ করা মোস্তাহাব।’ (মুসলিম)
‘আল্লাহ যাকে পুণ্যময়ী স্ত্রী দান করেছেন, তাকে তার অর্ধেক দ্বীনে সাহায্য করেছেন।’ বলে উল্লেখ করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
অন্য হাদিসে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নেককার স্ত্রীর প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে ধরে স্বামীদের জানিয়ে দিয়েছেন যে-
‘শোকরকারী হৃদয়, জিকিরকারী জিহ্বা এবং পুণ্যময়ী স্ত্রী; যে তোমাকে তোমার দুনিয়া ও দ্বীনের কাজে সহযোগিতা করে, এ সব হল মানুষের জন্য সঞ্চিত সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ।’
সুতরাং একজন স্ত্রী চাইলে তার স্বামীকে দ্বীনের ব্যাপারে পুরোপুরি আগ্রহী করে গড়ে তুলতে পারে। ইবাদত-বন্দেগিসহ কল্যাণের যে কোনো কাজে ধাবিত করতে পারে। এ জন্য নেককার স্ত্রী ভূমিকা অনেক বেশি।
যেমন উদাহরণ স্বরূপ উল্লেখ করা যেতে পারে-
নামাজের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ার ব্যাপারে উৎসাহ যোগাতে পারে। ফলে সে ঘরে নামাজ না পড়ে মসজিদে আদায় করলে ২৫/২৭ গুণ সাওয়াব বেশি পাবে।
আবার কোথাও জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা শোনা গেল স্বামীকে জানাজায় যাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ যোগাতে পারে। কেননা জানাজায় অংশগ্রহণে রয়েছে ওহুদ পাহাড় পরিমাণ সাওয়াব লাভের ঘোষণা। হাদিসে পাকে জানাজায় অংশগ্রহণের সাওয়াবের ব্যাপারে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নিশ্চয় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মৃত মুসলিম ব্যক্তির জানাজায় ঈমানের সঙ্গে সাওয়াবের নিয়তে শরিক হয় এবং তার জানাজা আদায় ও দাফন পর্যন্ত থাকে; তবে সে দুই কেরাত সাওয়াব নিয়ে ফিরবে। যার প্রতি কেরাত হলো ওহুদ পাহাড়ের সমান। আর জানাজা পড়ে দাফনের আগে ফিরে আসলে সে এক কেরাত নেকি নিয়ে ফিরবে।’ (বুখারি, মুসলিম)
স্বামীকে দ্বীনের দিকে, কল্যাণের দিকে সহযোগিতা করলে স্ত্রী কী লাভ?
এভাবে স্বামীকে দ্বীন বা কল্যাণের প্রতি উৎসাহদাতা, সহযোগী, দ্বীনদার স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের সঙ্গে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন-
‘তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের নিয়ে সানন্দে চিরস্থায়ী জান্নাতে প্রবেশ কর।’ (সুরা যুখরুফ : আয়াত ৭০)
এতে উভয়ের জন্যই রয়েছে কল্যাণ। এ কারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ যাকে পুণ্যময়ী স্ত্রী দান করেছেন, তাকে তার অর্ধেক দ্বীনে সাহায্য করেছেন।’
সুতরাং নেককার স্ত্রীদের উচিত, তারা নিজেদের স্বামীদের সব সময় কল্যাণের কাজে এগিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহ দেয়া। দ্বীনের কাজে সহযোগিতা করা। তবেই দুনিয়া ও পরকালে শান্তি ও কল্যাণে ভরে উঠবে তাদের জীবন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নারী-পুরুষকে পস্পরের জন্য কল্যাণের কাজের সহযোগী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন