‘স্যাটেলাইটের টাকা ১৫ বছরেও তুলে আনা সম্ভব হবে না’

কাগজে কলমে সাত বছরের কথা বলা হলেও বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের ব্যয়ের তিন হাজার কোটি টাকা তুলতে সময় লাগবে ১৫ বছরের বেশি। আর সুষ্ঠু বাণিজ্যিক পরিকল্পনা না করা গেলে এই সময়ের মধ্যেও ব্যয় তুলে আনা সম্ভব না বলে মনে করছেন তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান লার্ন এশিয়ার সিনিয়র পলিসি ফেলো আবু সাঈদ খান।

বুধবার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট : সম্ভাবনার মহাকাশ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এ মতামত ব্যক্ত করেন তিনি।

আবু সাঈদ খান বলেন, ‘সরকারের দুটি মাত্র কোম্পানি কেরু অ্যান্ড কোং ও সাবমেরিন কেবল লাভজনক। অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান লাভজনক না। এখানে বলা হচ্ছে, আগামী ৭ থেকে ৮ বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বিনিয়োগের পুরো টাকা উঠে আসবে। এটা শুনতে ভালো লাগে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ক্যাপাসিটি বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বিক্রি করতে না পারি, তাহলে সেলিব্রেশন করে লাভ নেই। ১৫ বছরেও ব্যয়ের তিন হাজার কোটি টাকা তুলে আনা সম্ভব হবে না।’

বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে সামগ্রিক পেক্ষাপট বিবেচনায় নেয়ার আহ্বান জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু-১ যেন এনটিটিএনগুলোর (ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক) কাছে জিম্মি না হয়। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, তিন হাজার কোটি টাকা, আমি ৭/৮ বছরের কথা বলছি না, বিনিয়োগের টাকা যেন উঠে আসে, সেভাবে কাজ করতে হবে।’

গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ স্থল ফ্লোরিডায় সরকারের ৪২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল থাকবে। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হওয়ার পর জাতীয়ভাবে তা উদযাপন করা হবে।

তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে আমারা যখন স্যাটেলাইট ব্যবহার করতে শুরু করব তখন নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারব। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট শুধু কারিগরি বা ব্যবসার বিষয় নয়, এটি আমাদের গর্বের বিষয়। আমার মনে হয়েছে আমাদের প্রস্তুতি যতটুকু করা সম্ভব ছিল তার কোনোটার কোনো কমতি নাই।

গোলটেবিল আলোচনায় বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী প্রতিষ্ঠান স্পেস এক্স জানিয়েছে, ৫ মে আবহাওয়া খারাপ হতে পারে। আবহাওয়ার এমন আশঙ্কা থেকেই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের তারিখ পেছানো হয়েছে।

আলোচনা সভায় অন্যান্যদের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মেজবাহউজ্জামানসহ সংশ্লিষ্টরা ও টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্কের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।