হতাশার হারে ‘শেষ’ টাইগারদের স্বপ্নের টুর্নামেন্ট

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগে কেউ হয়তো কল্পনাও করেননি যে, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও স্বাগতিক ইংল্যান্ডের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশ খেলবে সেমিফাইনালে। কিন্তু শেষপর্যন্ত সেটাই করে দেখিয়েছেন মাশরাফি-মুশফিকরা। শেষ চার নিশ্চিত করার পর অনেকে দেখতে শুরু করেছিলেন আরও বড় কিছুর স্বপ্ন। তবে শেষপর্যন্ত তেমনটা হলো না। ভারতের কাছে ৯ উইকেটে হেরে সেমিফাইনালেই থামল বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা।

শুরুতে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবাল আর মুশফিকুর রহিমের দারুণ ব্যাটিং বড় সংগ্রহের স্বপ্নই দেখিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মাঝপর্যায়ের ব্যাটিং বিপর্যয়ে স্কোরটা প্রত্যাশা অনুযায়ী বড় হয়নি। ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ থেমে গেছে ২৬৪ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেছে ভারত। রোহিত শর্মার শতক, বিরাট কোহলির ৯৬ ও শিখর ধাওয়ানের ৪৬ রানের ইনিংসে ভর করে ৯ উইকেটের দাপুটে জয় পেয়েছে ভারত। ২৬৫ রানের লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে ৫৯ বল হাতে রেখেই।

উদ্বোধনী জুটিতে ৮৭ রান যোগ করে ভারতকে ভালো অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলেন দুই ওপেনার ধাওয়ান ও রোহিত। ১৫তম ওভারে বাংলাদেশ পেয়েছে কাঙ্ক্ষিত উইকেটের দেখা। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা সাজঘরে ফিরিয়েছেন ধাওয়ানকে। ৩৪ বলে ৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরেছেন দারুণ ফর্মে থাকা শিখর ধাওয়ান। তবে তাতেও স্বস্তি মেলেনি বাংলাদেশের বোলারদের। দ্বিতীয় উইকেটে ১৭৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন রোহিত ও অধিনায়ক কোহলি। ১২৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন রোহিত। মাত্র চার রানের জন্য শতক পাননি কোহলি। অপরাজিত ছিলেন ৯৬ রান করে। ম্যাচজেতানো এই ইনিংসটি খেলার পথে ওয়ানডেতে আট হাজার রানের মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন ভারতের অধিনায়ক।

এর আগে ভারতের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বাংলাদেশ পড়েছিল চাপের মুখে। সাত ওভারের মধ্যে ৩১ রান সংগ্রহ করতেই সাজঘরে ফিরেছিলেন সৌম্য সরকার (০) ও সাব্বির রহমান (১৯)। তৃতীয় উইকেটে ১২৩ রানের জুটি গড়ে অবশ্য দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন তামিম (৭০) ও মুশফিক (৬১)। স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন বড় সংগ্রহের। কিন্তু ২৮তম ওভারে এই জুটি ভাঙার পর বাংলাদেশ আবার পড়েছিল ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে। শেষ ২০ ওভারে বড় কোনো জুটিই গড়ে তুলতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।

৩৫ থেকে ৪৫; এই ১০ ওভারের মধ্যে বাংলাদেশ হারিয়েছে চারটি উইকেট। ১৫ রানের ছোট দুটি ইনিংস এসেছে সাকিব আল হাসান ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ব্যাট থেকে। ২১ রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ। শেষপর্যায়ে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার ৩০ ও তাসকিন আহমেদের ১১ রানের ইনিংসে ভর করে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে জমা হয়েছে ২৬৪ রান।

প্রথমবারের মতো আইসিসির বড় কোনো প্রতিযোগিতার সেমিফাইনাল খেলতে নেমে শুরুতে ভাগ্যের সহায়তা পায়নি বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি।