হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি’র ঘটনা

সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য।নুরে মুজাসসাম হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরুদ শরীফ ও সালাম। হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সময়ের একটি ঘটনা রয়েছে। মনোযোগ দিয়ে পড়ার আহবান রইল আশা করি ভালো লাগবে!

হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে এক জনৈক ইহুদি মুহব্বত করতেন। একদিন ইহুদি উনার নিকটে এসে কিছুক্ষণের মধ্যেই যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়লো। হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন, কোথায় যাচ্ছ?

ইহুদি বললো, আজ আমাদের একটা বড় সমাবেশ আছে। সব ইহুদি সেখানে আসবে আমিও যাবো, হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন আমাকে তোমার সাথে নিয়ে চলো আমিও তোমাদের বেশ ধরে সেখানে যাবো।হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তার সাথে সেখানে গিয়ে দেখেন একটি উচু আসন তৈরি করা হয়েছে।

কিছুক্ষণ পর সেখানে একজন বৃদ্ধকে এনে বসানো হলো, এই বৃদ্ধ প্রতিবছর এখানে বসে জনতাকে একটি মাত্র উপদেশ দিতেন, তাহারা সবাই সেই উপদেশ পালন করতো। কিন্তু এবার সে চুপ করে বসে রইলো৷ ভক্তরা বলে উঠলো, আপনি আজ কিছু বলছেন না কেন? আপনার বানী শুনার জন্য আমরা আগ্রহী হয়ে বসে আছি। বৃদ্ধ বললো, এই মজলিসে একজন মুসলমান আছে।

তাই আমি কোন কথা বলতে পারছিনা।ইহুদিরা বলে উঠলো, কে সে মুসলমান আমরা উনাকে হত্যা করবো। বৃদ্ধ বললো, খবরদার! তোমরা উনাকে হত্যা করবে না। ঐ সেই ব্যক্তি, উনাকে আমার নিকট নিয়ে আসো।হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে নিয়ে আসা হলো বৃদ্ধ বললেন, আপনি কেন এখানে এসেছেন?

হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উত্তর দিলেন তামাশা দেখার জন্য এসেছি। বৃদ্ধ বললো আপনি যখন এসেছেন, আমার কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর জানতে চাই আপনার কাছে।হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি
বললেন, আমি যদি উত্তর দিতে পারি তাহলে বলো তুমি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করবে কিনা?

বৃদ্ধ বললো, হ্যাঁ আমি ওয়াদা করলাম যদি আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন তাহলে আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করবো।হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন, প্রশ্নকারী বড়? না উত্তর দাতা বড়? সে বললো উত্তর দাতা বড়। তখন তিনি বললেন, তুমি প্রশ্ন কারী ঐ আসন থেকে নেমে আসো, আমি উত্তর দাতা ঐ আসনে বসে উত্তর দিবো। বৃদ্ধ নেমে আসলো তিনি গিয়ে ঐ আসনে বসে বললেন এবার প্রশ্ন করো?বৃদ্ধ বললো…

(১) আপনারা বলে থাকেন বেহেস্তে এত আহার হবে তবু পায়খানা-প্রস্রাবের প্রয়োজন হবেনা?
(২) বেহেস্তে এমন একটি বৃক্ষ থাকবে যার শাখা প্রশাখা বেহেস্তের প্রতিটি ঘরের উপর বিস্তার করবে?
(৩) বেহেস্তের নিয়ামত যতই খাওয়া হবে উহার ঘাটতি হবেনা?আমি এই প্রশ্নগুলির উত্তর চাই৷হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন…(১) নং প্রশ্নের উত্তর- সন্তান যখন তার মায়ের গর্ভে থাকে তখন মায়ের রক্ত আহার করে তার প্রস্রাব-পায়খানার প্রয়োজন হয়না।

(২) নং প্রশ্নের উত্তর- পৃথিবীতে সূর্য মাত্র একটা কিন্তু উহার আলো সমগ্র গৃহের উপর পড়ে।(৩) নং প্রশ্নের উত্তর- কুরআন শরীফ অগনিত লোকে তেলাওয়াত করে শ্রবণ করে এবং উহার দ্বারা উপকার ও পায়, কিন্তু উহার স্বাদ আর মাধুর্য কমেনা।অতঃপর হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন আমি তোমার তিনটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। এখন তুমি আমার একটি প্রশ্নের উত্তর দাও।

বৃদ্ধ বললো, প্রশ্ন করুন; হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন, বেহেস্তের দরজার উপর কি লেখা রয়েছে?বৃদ্ধ ইহা শুনে চুপ করে রইলো, সব ইহুদিগন বলে উঠলো আপনি আমাদের ধর্মীয় নেতা, আপনার তিনটি প্রশ্নের উত্তর তিনি দিয়েছেন, তাহার একটি প্রশ্নের উত্তর আপনি দিচ্ছেন না কেন?বৃদ্ধ বললো, আমি যেই উত্তর দিব তা যদি তোমরা মেনে নেওয়ার অঙ্গীকার করো, তবে অামি উত্তর দিবো।

তাহারা সকলেই অঙ্গীকার করলো হ্যাঁ আমরা মেনে নিব। বৃদ্ধা বললো বেহেস্তের দরজার উপর লেখা রয়েছে, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!এই কথা শুনে সব ইহুদি কালেমা পড়ে মুসলমান হয়ে গেল এবং ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় গ্রহন করলো৷ সুবহানাল্লাহ(আল ইহসান)