হাইকোর্ট তো বঙ্গবন্ধু করে দিয়ে গেছেন, কি করে উঠাই : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, অধস্তন (নিম্ন) আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি নিয়ে প্রধান বিচারপতি এজলাসে উঠে বলেন যে, ‘হাইকোর্টটা তাহলে উঠিয়ে দেন। হাইকোর্ট তো বঙ্গবন্ধু করে দিয়ে গেছেন। আমরা কি করে উঠিয়ে দেব। তাহলে এ কথা কি অপ্রাসঙ্গিক নয়।’
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তিনি প্রধান বিচারপতি। তার প্রতি আমার যথেষ্ট সম্মান আছে। আমি সেই সম্মান ও অধিকার রেখে মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে বলতে চাই, আমি তো হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট উঠানোর কথা বলিনি।’ সোমবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের এক সমাবেশে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত আচরণ বিধিমালার সংশোধিত খসড়ায় সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে থাকা রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা নিয়ে নিতে চায়। তিনি বলেন, ওনারা (সুপ্রিম কোর্ট) মাসদার হোসেন কেসে ডিসিপ্লিনারি রুলসের কথা বলেছেন। কেউ কিন্তু ডিসিপ্লিনারি রুলস করেনি। আমি আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পরে এ রুলসটা করি। যেহেতু ১০৯ অনুচ্ছেদে বলা আছে ( হাইকোর্ট বিভাগের অধস্তন সব আদালত ও ট্রাইব্যুনালের ওপর ওই বিভাগের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ-ক্ষমতা থাকবে) যে হাইকোর্ট, নট দ্য অ্যাপিলেট ডিভিশন। তাদের জানানোর জন্য এটা (রুলস) তাদের কাছে পাঠিয়ে ছিলাম।
তিনি বলেন, ‘তারা (সুপ্রিম কোর্ট) সংশোধন করে যেটা দিয়েছিল সেখানে দেখা গেছে, আমার কাছে ডকুমেন্ট আছে, ১১৬ অনুচ্ছেদে মহামান্য রাষ্ট্রপতির যে ক্ষমতা সেটা তারা নিয়ে নিতে চায়। আমি কি করে সেটা দেই? আপনারা আমাকে রায় দিয়ে দেন, বলেন? আমি তো দিতে পারি না।’
আনিসুল হক বলেন, আমি বললাম আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আসেন শেষ করে দেই। আমি একটা ড্রাফট পাঠিয়েছি। আপনারা কারেকশন করে দিয়েছেন। আমরা সেটার ওপর সেইটুকু হাত লাগিয়েছি। যেখানে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা দেয়া হয়েছে ১১৬ অনুচ্ছেদ (বিচার-কর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাবিধান রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকিবে এবং সুপ্রিম কোর্টের সহিত পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তাহা প্রযুক্ত হইবে) মতে, আমি শুধু বলেছি; না, এটা দেয়া যাবে না। ওটা ফেরত পাঠিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি তো এসে ওনাকে দিয়েছি। আমি তো এমন না পিয়ন বা আমার সচিবকে দিয়ে ওনার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। আমি এসে ওনাকে দিয়েছি। বলেছি আপনি পড়েন, আপনি দেখেন। তারপর যদি কোনো বক্তব্য থাকে আমাকে জানান। তারপরও আলোচনা করব। উনি এজলাসে উঠে বলেন যে, হাইকোর্টটা তাহলে উঠিয়ে দেন। হাইকোর্ট তো বঙ্গবন্ধু করে দিয়ে গেছেন। আমরা কি করে উঠিয়ে দেব। তাহলে এ কথা কি অপ্রাসঙ্গিক না?।’
তিনি প্রধান বিচারপতি। তার প্রতি আমার যথেষ্ট সম্মান আছে। আমি সেই সম্মান ও অধিকার রেখে মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে বলতে চাই, আমি তো হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট উঠানোর কথা বলিনি। ডিসিপ্লিনারি রুলস দিয়ে হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট উঠে না। আপনার এজলাসে বসে এগুলো বলার তো দরকার হয় না। আলাপ-আলোচনা তো আমি করবই। আমি কালকে যশোরে ছিলাম। ওনার কথা শুনে আমি ফোন করে বলেছি, আমি আসছি, বৃহস্পতিবার বসব। আমাদের সদিচ্ছা আছে।
বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ আয়োজিত সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির পরিচিতি সভা ও কর্মী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মতিন খসরু, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম প্রমুখ আইনজীবী নেতারা ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন