‘হাসিনাবিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে জানলেও হস্তক্ষেপ করতে পারেনি ভারত’ : দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন

ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এ সময়ে হাসিনাবিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে ভারত অবগত ছিল বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ভারত এ বিষয়ে অবগত হলেও তারা এ বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারেননি।

শনিবার (২২ মার্চ) ভারতীয় সংবাদমাদ্যম দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের আগে দেশটিতে একটি হাসিনাবিরোধী আন্দোলন গড়ে উঠছে বলে ভারত অবগত ছিল। পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদের পরামর্শক কমিটির বৈঠকে জয়শঙ্কর এমন তথ্য জানিয়েছেন।

জয়শঙ্কর বলেন, হাসিনার উপর প্রয়োজনীয় প্রভাবের অভাব ছিল। ফলে কেবল পরামর্শ দেওয়া যেত, তাই ভারতের পক্ষে এ বিষয়ে তেমন কিছু করার সুযোগ ছিল না।

দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জয়শঙ্কর ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ভারত অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের মতো বাংলাদেশের অভ্যন্তরের অস্থির পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত ছিল। এই প্রসঙ্গে তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্কের সাম্প্রতিক মন্তব্যের কথা উল্লেখ করেছেন। যেখানে বলা হয়, তুর্ক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিলেন যে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ করলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করতে পারে।

পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় পরামর্শক কমিটির সদস্যরা ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে জয়শঙ্করের সঙ্গে একটি খোলামেলা আলোচনায় মিলিত হন। এ আলোচনায় প্রতিবেশী দেশগুলোর পরিস্থিতি, বিশেষ করে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিষয়টি প্রাধান্য পায়।

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভারতের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে, তবে শেখ হাসিনাকে ভারতের আশ্রয় দেওয়ায় ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ভারত ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রীকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছে। তবে ২-৪ এপ্রিল ব্যাংককে অনুষ্ঠেয় বিমসটেক সম্মেলনের সাইডলাইনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক বৈঠক হতে পারে কিনা, সে বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মুখ বন্ধ রেখেছে।

ড. ইউনুস ক্ষমতা গ্রহণের পর ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। বর্তমানে তিনি চীন সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ সফরে চট্টগ্রাম ও ঢাকার সঙ্গে চীনের বিভিন্ন গন্তব্যের মধ্যে বিমান সংযোগ বৃদ্ধিসহ একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে। জয়শঙ্কর বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক নিয়েও আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, চীন প্রতিপক্ষ নয়, তবে প্রতিযোগী।