হাসিনা-মোদির বৈঠকে আসবে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথের ঘোষণা
করোনা পরিস্থিতিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই সরকার প্রধানের বৈঠকের আলোচ্যসূচি নিয়ে কোনও পক্ষ স্পষ্ট কিছু না জানালেও বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই দেশের সম্পর্ককে আরও সফল করতে ‘গতানুগতিক কূটনীতির ধারা’ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বৈঠকে ভারতের সঙ্গে রেলপথে যোগাযোগের আরও একটি রুট খুলতে যাচ্ছে। হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেল লিংক পরবর্তীতে যুক্ত হবে ট্রান্সএশিয়ান রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে।
বন্ধুপ্রতীম প্রতিবেশী ভারতের সাথে স্থলপথে বাংলাদেশের সীমানা অনেকটা মাকড়শার জালের মতো ছড়িয়ে। সুসজ্জিত এই কাঁটাতারের বেড়া ভেদ করে রেল চলবে দুই দেশের মধ্যে, সেই অপেক্ষা এখন ফুরোবার পথে।
অবিভক্ত ভারতের অন্যতম হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথটি ১৯৬৫ সালের পর বন্ধ হয়ে যায় পাকিস্তান-ভারত দ্বন্দ্বে। ৫৫ বছর পর এই পথটি সম্ভাবনার নতুন মাত্রা নিয়ে হাজির দুই দেশের কাছে।
করোনার প্রেক্ষাপটে আগামীকাল ভার্চুয়াল মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসছেন শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদি। দুই দেশের কোন কোন ইস্যুগুলো ঠাঁই পাচ্ছে আলোচনার টেবিলে, সেটি প্রকাশিত না হলেও এই বৈঠক থেকেই নীলফামারির চিলাহাটি ও পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহারের অন্তর্গত হলদিবাড়ি স্টেশনে ট্রেন চলাচলের ঘোষণা দেবেন দুই শীর্ষ নেতা। প্রাথমিকভাবে একটি মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে এই পথে। উদ্বোধনী দিনে নতুন রেলপথে ট্রেন যাবে নীলফামারি থেকে কুচবিহারে। এজন্য ভারতের দিকে সাড়ে ৪ এবং বাংলাদেশ অংশে নির্মাণ করা হয়েছে সাড়ে ৭ কিলোমিটার নতুন রেললাইন।
নতুন রেল লিংক চালুর বিষয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ। রেলমন্ত্রীর দাবি, ২৬ মার্চ থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে এই পথে। পরবর্তীতে যা যুক্ত হবে ভূটান ও নেপালের সঙ্গেও।
রেলমন্ত্রী নরুল হক সুজন বলেন, ২৬ মার্চ তথা আমাদের স্বাধীনতা দিবসে যাত্রাবাহী ট্রেন যাতে ঢাকা থেকে শিলিশুড়ি যেতে পারে সে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ট্রেনে মালামাল আনা নেয়া করলে অনেক কম খরচে নিয়ে আসা যাবে, সেটা সড়ক পথে অনেক খরচ পড়ে।
মহামারির মধ্যেই দুই প্রধানমন্ত্রীর এই বৈঠক নিয়ে উদগ্রীব দেশের কূটনৈতিক মহল। সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব মনে করেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০ বছরে প্রয়োজন দেনা-পাওনার নতুন হিসেব কষা।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল ইসলাম বলেন, একটা নতুন জেনারেশনের হাতে এখন দুই দেশের সম্পর্ক।
তিস্তার পানি বণ্টন, সীমান্তে হত্যা বন্ধসহ ভারতের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা ইস্যুগুলোর সমাধানে আরো গতিশীল কূটনীতির আহ্বান সাবেক পররাষ্ট্র সচিবের।
তিনি বলেন, পানিবণ্টনে ভাগাভাগি প্রশ্ন থেকে সরে এসে উন্নয়নের কথা বিবেচনা করা দরকার। আমরা ওয়াটার রিসোর্স কীভাবে উন্নয়নের স্বার্থে ব্যবহার করা হবে সেটা দেখা উচিত।
দুই দেশের বাণিজ্যে সমতা আনাসহ, সরবরাহ ও যোগান স্বাভাবিক রাখতে আঞ্চলিক মজুদ ব্যবস্থাপনা গড়তে ঢাকা-নয়াদিল্লীকে আরো পথ পাড়ি দিতে হবে বলে জানান পররাষ্ট্র বিশ্লষকরা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন