হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ট্রাকে ট্রাকে ঢুকছে ভারতের চাল
খাদ্যশস্যের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত উত্তরের জনপদ দিনাজপুর। দিনাজপুর জেলার প্রতিটি উপজেলায় এখন চলছে বোরো ধান কাটাই-মাড়াইয়ের কাজ। ফলন ভালো হলেও ধানের নায্য দাম না পাওয়ায় উৎপাদন খরচ উঠবে কিনা এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা।
এই অবস্থায় ভারত থেকে চাল আমদানি করছেন দেশের কিছু ব্যবসায়ী। বিদেশ থেকে চাল আমদানি করায় ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে দেশের কৃষকদের। আমদানিকারক ও ভারতের কৃষকরা লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের কৃষক পরিবারগুলো।
দেশে ধানের প্রচুর উৎপাদন হওয়ায় সত্ত্বেও দেশে যখন বিদেশ থেকে ট্রাকে ট্রাকে ঢুকছে চাল ঠিক তখনই এক শ্রেণির মিল-মালিকদের যোগসাজসে কম দামে বিক্রি হচ্ছে ধান।
হিলি স্থলবন্দরের রিত্তিক এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী ও চাল আমদানিকারক অভিনাস মোড় জানান, আমরা ভারত থেকে চাল আমদানি করছি। দেশের বাজারে আমদানি করা চালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে সম্পা কাটারি ও আতপ জাতের চালে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমরা মূলত ভারত থেকে ৩৯০ থেকে ৪শ’ ডলার দিয়ে চাল আমদানি করে থাকি। আর সরকারকে ট্যাক্স ও ভ্যাট দিয়ে বাজারে এই চাল বিক্রি করছি ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা দরে।
হিলি ধানের আড়তদার মসফিকুর রহমানকে ধানের দাম কম কেন জানতে চাইলে তিনি জানান, বর্তমানে দেশে প্রচুর চাল আমদানি হচ্ছে। আর যে কারণে মিল মালিকরা ধান কিনতে চাচ্ছে না। আমরা টুকটাক যে ধান কিনতেছি তা ভালো দামেই কিনতেছি। মিল মালিকরা যদি ধান নিতো তাহলে একটু হলেও দাম পেত কৃষকরা।
হিলির প্রান্তিক কৃষক সাফিয়ার রহমান জানান, দেশে ধানের যে উৎপাদন হয়েছে তা দিয়ে একপ্রকার দেশের চাহিদা মিটতো। সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানি করাতেই আমরা ধানের দাম কম পাচ্ছি। সরকারের কাছে অনুরোধ চাল আমদানি বন্ধ করে দেশের কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করে তা বিদেশে রপ্তানি করতে শুরু করলে আমরা একপ্রকার দাম পাবো। আমি গতকাল মোটা জাতের ১০ মন ধান ৪শ’ টাকা মণ দরে বাজারে বিক্রি করেছি।
হিলি কাষ্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম জানান, চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে ১১ হাজার ৮শ ৬৮ মেট্রিক টন, ফেব্রুয়ারি মাসে ৭ হাজার ৯শ ৬৫ মেট্রিক টন, মার্চ মাসে ৯ হাজার ৬শ ৯৭ মেট্রিক টন এবং এপ্রিল মাসে ৮ হাজার ২শ ১২ মেট্রিক টন চাল ভারত থেকে আমদানি হয়েছে। শুধু চলতি মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৬ হাজার ৩শ ৪৪ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে।
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুর রাফিউল আলম জানান, আমরা ইতিমধ্যে ধান ও চাল ক্রয় সংগ্রহের উদ্বোধন করেছি। এবার আমাদের উপজেলায় সরকার ২১৫ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হবে। আমাদের খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তার কাছে ১৪ হাজার কৃষকরে একটি তালিকা রয়েছে। আমরা তাদের থেকে সরকারি দামে ধান কিনবো।
তিনি আরো জানান, আমরা স্থানীয়ভাবে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এসব কৃষকের মধ্যে যাদের জমি ১ একরের কম তাদের নাম দিয়ে লটারির মাধ্যমে ধান ক্রয় করা হবে।-সময়টিভি’র সৌজন্যে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন