১০০ রোগীকে হত্যা করেছেন এই নার্স

১০০ রোগীকে হত্যার অভিযোগে এক নার্সের বিচার শুরু করেছে জার্মান। দেশটির ওল্ডেনবার্গ শহরের একটি আদালতে তার বিচার হচ্ছে। ঘাতক ওই নার্সের নাম নিলস হগেল (৪১) বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

গোয়েন্দারা বলছেন, হগেল তার তত্ত্বাবধানে থাকা রোগীদের শরীরে প্রাণঘাতি ওষুধ প্রয়োগ করে মেরে ফেলতেন। তার উদ্দেশ্যে ছিল এসব রোগীদের শরীরে প্রাণঘাতি ওষুধ প্রয়োগ করে জ্ঞান ফিরিয়ে আনার নাম করে সহকর্মীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করা। তিনি তার অধীনে থাকা দুই হাসপাতালের রোগীদের সঙ্গে এটি করতেন।

কয়েকজন রোগীকে হত্যার দায়ে হেগেল বর্তমানে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তবে নতুন করে তার বিরুদ্ধে ওল্ডেনবার্গে ৩৬ জন ও ডেলমেনহরস্টের ৬৪ রোগীকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব রোগীদের দেহাবশেষ পরীক্ষা করে তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। কারণ এসব দেহাবশেষে বিষ প্রয়োগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ১৯৯৯ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে এ ঘটনাগুলো ঘটেছে।

বিবিসির বার্লিন সংবাদদাতা জেনি হিল বলছেন, জার্মান স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। নিহত রোগীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ আসায় চরম বিপাকে পড়েছে সরকারের এ অংশটি।

জেনি হিল জানিয়েছেন, হগেলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হলে জার্মানিতে যুদ্ধ-পরবর্তী সিরিয়াল কিলারের তকমাটি তার গায়েই লাগবে। তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, তার বিরুদ্ধে যত রোগী হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আরও অনেক রোগীর হত্যাকাণ্ডে জড়িত।

ভিকটিম সাপোর্ট গ্রুপের সদস্য পেট্রা ক্লেইন। তার ধারণা, নিলস হগেলের বিরুদ্ধে যেসব রোগীকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে, তার সবটাতেই তিনি ফেঁসে যাবেন এবং দোষী প্রমাণিত হবেন।

রোগীকে অননুমোদিত ওষুধ প্রয়োগ করার অভিযোগে ২০০৫ সালে গ্রেফতার করা হয়। হত্যা চেষ্টার অভিযোগে ২০০৮ সালে তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

২০১৪-১৫ সালে এই দুই বছরে তার বিরুদ্ধে দুই রোগীকে হত্যা এবং আরও দুই রোগীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ আনা হয় এবং তিনি দোষী প্রমাণিত হন। এ ঘটনায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

এ সময় তিনি আদালতকে বলেছিলেন, ‘তিনি সবগুলো হত্যাকাণ্ড ঠাণ্ডা মাথায়ই করেছেন এবং এজন্য তিনি অনুতপ্ত।’

বিচার চলাকালীন একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে স্বীকারও করেন যে, কমপক্ষে ৩০ জনকে হত্যা করেছেন তিনি।

এরপরই নড়েচড়ে বসেন তদন্ত কর্মকর্তারা। তারা অন্তত ১৩০টি দেহাবশেষ পরীক্ষা করেন এবং তিনি যেসব জায়গায় আগে কর্মরত ছিলেন সেইসব জায়গা থেকে যাবতীয় নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়।

জার্মানি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, তার ওল্ডেনবার্গ কমক্ষেত্রের নথিপত্র ঘেঁটে জানা যায়, নিলস হগেল যে শিফটে কাজ করতেন, হত্যাকাণ্ডলো ওই সময় সংঘটিত হয়েছে।