১০ মাসে সড়কে ঝরল ৩৬০৮ প্রাণ
সারাদেশে গত ১০ মাসে ২ হাজার ৯২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৬০৮ জন নিহত ও ৭ হাজার ৭৮৬ জন আহত হয়েছেন। নিহতের তালিকায় ৪২৩ নারী ও ৪৬৫ শিশু রয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে এসব দুর্ঘটনা ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
বুধবার বেসরকারি সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির (এনসিপিএসআরআর) নিয়মিত মাসিক জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
২২টি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং আটটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংগঠনটি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১০ মাসের মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে সর্বাধিক ৩৭২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫৬ নারী ও ৫৮ শিশুসহ মোট ৪৭২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৯৪ জন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে আগস্টে। এ মাসে ২১৭টি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ২৫ নারী ও ৩১ শিশুসহ মোট ২৭৯ জনের প্রাণহানি হয়। আহত হয় ৫০৩ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারিতে ৩৫০টি দুর্ঘটনায় ৫৪ নারী ও ৫৫ শিশুসহ ৪১৬ জন নিহত হয়। আহত হয় ১ হাজার ১২ জন। মার্চে ৩৩০টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় ৩৬২ জন, যার মধ্যে ৪৯ নারী ও ৫৪ শিশু রয়েছে। আর আহত হয়েছে ৮৬৫ জন।
এপ্রিলে ৩২০টি দুর্ঘটনায় ৪৭ নারী ও ৪৮ শিশুসহ ৩৪৯ জন নিহত এবং ৮৬১ জন আহত হয়। মে মাসে দুর্ঘটনা ঘটে ৩৪৬টি। এতে ৫২ নারী ও ৫৮ শিশুসহ ৪১০ জন নিহত ও ১ হাজার ১৬ জন আহত হয়। জুনে ২৬৫টি দুর্ঘটনায় ৩৪ নারী ও ৪২ শিশুসহ ৩৩৩ জন নিহত ও ৬৩২ জন আহত হয়। জুলাইয়ে দুর্ঘটনা ঘটে ২১৯টি। এতে নিহত ও আহত হয় যথাক্রমে ২৭৯ ও ৫১৭ জন। নিহতদের মধ্যে ২৭ নারী ও ৩৫ শিশু রয়েছে। সেপ্টেম্বরে ২৪৯টি দুর্ঘটনায় ৩৮ নারী ও ৩৯ শিশুসহ ৩৫৬ জন নিহত এবং ৬০৫ জন আহত হয়। অক্টোবরে ২৫৮টি দুর্ঘটনায় ৩৭৯ জন নিহত ও ৬৮১ জন আহত হয়। নিহতদের মধ্যে ৪১ নারী ও ৪৫ শিশু রয়েছে।
কমিটির তথ্য মতে, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের ঘটনা বেশি ঘটলেও জুন মাস থেকে তা কমতে শুরু করে। তবে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা আবারও বেড়ে যায়।
সড়ক দুর্ঘনা সম্পর্কে জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে বলেন, তাদের পর্যবেক্ষণে বর্তমান সময়ে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য ৯টি প্রধান কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দুর্ঘটনা বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর যথাযথ তদারকি ও নিয়ন্ত্রণের অভাব এবং সাধারণ মানুষের অসচেতনতাকেই দায়ী করেন তিনি।
সড়ক দুর্ঘটনার ৯ কারণ-
১. গাড়ি চালানোয় বেপরোয়া গতি, ২. সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেলসহ তিন চাকার যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি, ৩. স্থানীয়ভাবে তৈরি দেশীয় ইঞ্জিনচালিত ক্ষুদ্রযানে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন, ৪. বিধি লঙ্ঘন করে ওভারলোডিং ও ওভারটেকিং, ৫. জনবহুল এলাকাসহ দূরপাল্লার সড়কে ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করা, ৬. দীর্ঘক্ষণ বিরামহীনভাবে গাড়ি চালানো, ৭, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও বেহাল সড়ক, ৮. ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব এবং ৯. অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন