১০ লাখ নয়, বাংলাদেশকে ৩ লাখ টন চাল দিতে রাজী মিয়ানমার

১০ লাখ টন চাল আমদানির লক্ষ্য নিয়ে মিয়ানমার গিয়েছিলেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। কিন্তু মিয়ানমার সরকার রাজি হয়েছে ৩ লাখ টন চাল দিতে। ওই পরিমাণ চাল আমদানির একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। তবে এর মধ্যে ৫০ হাজার টন সিদ্ধ ও আড়াই লাখ টন আতপ চাল দেবে মিয়ানমার। গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোয় একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ওই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশের পক্ষে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মিয়ানমারের পক্ষে দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী থান মিন্ট নিজ নিজ দেশের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। সমঝোতা অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় সংস্থা মিয়ানমার রাইস ফেডারেশন আগামী ছয় বছর প্রতিবছর ৩ লাখ টন চাল বাংলাদেশে সরবরাহ করবে। তবে ওই চালের দাম কত হবে, তা ঠিক হবে আরও পরে। সংস্থাটির একটি প্রতিনিধিদল চলতি মাসে বাংলাদেশে এসে দাম নিয়ে আলোচনা করে তা ঠিক করবে।

তবে ওই চাল আগামী ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশে আসছে না বলে সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট সই টুন মিয়ানমারের দুটি শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। ইলেভেন মিয়ানমার ও দা গ্লোবাল পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সই টুন বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবছর ১০ লাখ টন চাল আমদানির ব্যাপারে আগ্রহ জানানো হয়েছিল। মিয়ানমার মূলত চীনসহ ২১টি দেশে চাল রপ্তানি করে। এ বছর নতুন করে ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চাল আমদানির আগ্রহ দেখানো হয়েছে। ফলে মিয়ানমার এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভালো দামে চাল বিক্রি করতে চায়।

মিয়ানমারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ বছরে ৩ লাখ টন করে চাল আমদানি করবে। এর আগে মিয়ানমার মূলত বিভিন্ন দেশে বেসরকারি খাতের মাধ্যমে চাল রপ্তানি করত। বাংলাদেশের সঙ্গে এই প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করল।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিব ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ হেলাল হোসেইন বলেন, চলতি মাসেই মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসবে। তারা চালের দাম নির্ধারণ করার পর রপ্তানির প্রক্রিয়া শুরু হবে।

মিয়ানমারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির শীর্ষ দৈনিক দ্য গ্লোবাল জানিয়েছে, বাংলাদেশ চাল আমদানি শুরু করায় মিয়ানমার চালের দাম বাড়াতে পেরেছে। চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত তারা চাল রপ্তানি করে আয় করেছে ৩০ কোটি ডলার। গত বছর তা ছিল ১৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার।