১১ মাথার বিরল নারকেল গাছ সংরক্ষনের দাবি শিক্ষার্থীদের
১১ মাথার গাছ! অস্বাভাবিক ভাবনার জগতের বাস্তবতার প্রতিফলন। কেননা গাছটির সবগুলো মাথাই স্বমহিমায় সতেজ। মাথাগুলো ফলও দিচ্ছে। একটা গাছের এতো মাথা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে কৌতুহলের শেষ নেই। বিস্ময়কর এ গাছটি সম্পর্কে বিজ্ঞান ভিত্তিক ব্যাখা না দিলেও কেউ এটিকে প্রাকৃতিক নিদর্শন মনে করছেন, কেউবা অলৌকিক আখ্যা দিচ্ছেন।
এমন সব গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু ১১ মাথার একটি নারকেল গাছ। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের কাছিকাটা স্কুল মাঠের উত্তরকোণে গাছটি একাধিক মাথা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
গ্রামের মানুষ গাছটি নিয়ে নানাবিদ জল্পনা-কল্পনায় মত্ত হলেও একাধিক মাথা নিয়ে বিজ্ঞান সম্মত তেমন কোনো ব্যাখা পাওয়া যায়নি। রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হাবিবুল আলম বলেন, একটি নারকেল গাছের ১১টি মাথা নিয়ে বৈজ্ঞানিক কোন ব্যাখ্যা নেই। প্রকৃতিতে বিভিন্ন সময় এমন বৈচিত্রময় ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এটিকে প্রকৃতির এক অপরুপ সৌন্দর্য্যের দৃষ্টান্ত বলা যেত পারে।
গাছটির জন্মের প্রায় ৩৫ বছর। তবে কারো কারো মতে ৪০ বছর। গাছটির জন্মকাল ঠিক করে বলা না গেলেও ৮০ বছরের প্রবীণ স্থানীয় আলী আকবর জানালেন, তার চোখের ওপরেই গাছটির বেড়ে উঠা। প্রথমে গাছটির জীবন স্বাভাবিক-ই ছিল। পর্যায়ক্রমে ১১টি মাথা জন্ম নেয় এই গাছে। এখন সবকটি মাথাতেই নারকেল ধরছে।
সরেজমিনে সতত্যা মিললো আকবর আলীর কথায়। দেখা গেল, কাছিকাটার প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের এই ক্যাম্পাসের উত্তরে কাছিকাটা-চাটমোহর সড়কের কোল ঘেঁষে গাছটি নিজের অপরূপ সুন্দর্য্য ঢেলে দাঁড়িয়ে আছে। গোড়া থেকে গাছটির উচ্চতা প্রায় ১৫ ফিট। এরপর দুটিখণ্ডে বিভক্ত হয়ে একটিতে ৫টি ওপরটিতে ৬ মাথার জন্ম। তরতাজা এসব মুন্ডুতে ঝুলছে ডাব।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের বেশকিছু শিক্ষার্থী বলেন, গাছটি নিয়ে তাদের অনেক প্রশ্ন রয়েছে। কখনো কখনো নিজেরা প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেন। এতে তাদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১১ মাথার নারকেল গাছটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি তাদের।
কাছিকাট স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতনা কর্মকার বলেন, গাছটিকে তারা কাছিকাটা গ্রামের ঐহিত্য মনে করেন। তাছাড়া প্রাথমিক, মাধ্যমকি এবং উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা গাছটিকে দেখে বিচিত্র অনেক কিছু শিখতে পারছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন পিয়ন কয়েক যুগ আগে বেশকিছু নারকেল গাছ রোপন করেছিলেন। তারই একটা এই ১১ মাথার নারকেল গাছ। গাছটি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আগ্রহ থাকলেও গাছটির আলাদা করে কোনো যত্ন নেওয়া হয়না।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন, একটি নারকেল গাছের ১১টি মাথা অদ্ভুত বিষয়। গাছটি দেখতে দূর থেকে অনেক পর্যটক আসছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পর্যটকদের বসার জায়গা তৈরি, যত্ন নেওয়াসহ গাছটি সংরক্ষণে নানা উদ্যোগ নেবেন তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন