১৪ দলের ভবিষ্যৎ স্পষ্ট হবে বৃহস্পতিবার

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে তা অনেকটাই স্পষ্ট হবে আগামী বৃহস্পতিবার। এদিন জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ১৪ দলের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা এমনটা জানিয়েছেন।

১৪ দলের একাধিক সূত্র জানায়, ১৪ দল নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে নাকি আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করবে তা নির্ধারিত হবে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে। এদিন আওয়ামী লীগ সভাপতি কী বার্তা দেবেন তার দিকে তাকিয়ে আছে জোটের শরিকরা।

১৪ দলের একাধিক শরিক দলের কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, বিগত জাতীয় নির্বাচনে আসন বণ্টন, নির্বাচনের ফল ও পরে সরকার গঠন নিয়ে জোটের শরিকদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। জোটের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই প্রকাশ্যে বলেছেন যে ১৪ দল আর কার্যকর নেই।এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবারের বৈঠককে জোটের পরিণতি নির্ধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।

জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের ডেকেছেন, এটাকে স্বাগত জানাই। তিনি এরই মধ্যে ১৪ দলকে রাখার পক্ষে কথা বলেছেন। বিগত নির্বাচনের পরে নতুন সরকার, নতুন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

আমরা আশা করছি বৃহস্পতিবারের বৈঠকে জোটের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম কী হবে সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রস্তাব পাব। তার ভিত্তিতে আমরা পরবর্তী করণীয় ঠিক করব।’

১৪ দলের একাধিক সূত্র জানায়, আজ মঙ্গলবার ও আগামীকাল বুধবার ১৪ দলের শরিকরা নিজেদের দলের বৈঠক ও অন্য শরিকদের সঙ্গে শলাপরামর্শ করবে। বৃহস্পতিবার শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যায় তা ঠিক করা হবে।

তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।এর আগে মঙ্গলবার আমরা নিজেরা বসব।’

সূত্রগুলো জানায়, বৈঠকে জোটের শরিকরা মূলত শেখ হাসিনার কাছে রাজনৈতিক সুবিধা, মূল্যায়ন এসব দাবি করবে। ২০০৪ সালে জোট গঠনের আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে শরিকদের যে সমঝোতা হয়েছিল সেখানে একসঙ্গে আন্দোলন, একসঙ্গে নির্বাচন ও একসঙ্গে সরকার গঠনের বিষয় ছিল। কিন্তু সরকারের গত মেয়াদ থেকে আওয়ামী লীগ একাই মন্ত্রিসভা গঠন করে আসছে। সেখানে শরিকদের কাউকে রাখা হচ্ছে না। এ বিষয়টি শেখ হাসিনাকে আবারও মনে করিয়ে দেবেন শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা।

সূত্র মতে, গত পাঁচ-ছয় বছর ধরে ঢাকার বাইরে কোথাও ১৪ দলকে সক্রিয় করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি আওয়ামী লীগ। জোটের প্রধান শরিক হিসেবে আওয়ামী লীগের কাছে শরিকদের প্রত্যাশা হলো—জেলা, উপজেলায় ১৪ দলের ঐক্যকে কার্যকর করা, একসঙ্গে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা। জেলা, উপজেলা পর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক কমিটিতেও ১৪ দলের শরিক দলগুলোর প্রতিনিধি রাখা হয় না। এই বিষয়গুলো শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করা হবে।

জাতীয় পার্টি-জেপির মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘১৪ দলের বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন। জোটের অন্য নেতাদেরও বক্তব্য শুনবেন।’