১৯ মামলার আসামি কিন্তু পুলিশ তাকে ‘খুঁজে’ পায় না!
মো. শহীদ তার নাম। যার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন শেষ নেই। পুলিশের খাতায় তিনি একজন তালিকাভুক্ত ডাকাত সর্দার। ছিনতাই, অপহরণ, খুন, ধর্ষণ-কোন অভিযোগটি নেই তার বিরুদ্ধে! সর্বশেষ দেশজুড়ে আলোচিত যুবলীগ নেতা দাউদ সম্রাট হত্যার প্রধান আসামি তিনি। নামের সাথে নতুন বিশেষণ যুবলীগ শব্দ যোগ হয়েছে তার।
সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড় এলাকার দুর্ধর্ষ ডাকাত সর্দার তিনি। অভিযোগ রয়েছে, শহীদের পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছে স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও অসাধু কর্মকর্তারা। এই খুঁটির জোরের প্রভাবে এখনো তিনি এখনো অধরা। কিন্তু ১৯ মামলায় হুলিয়া মাথায় নিয়ে তিনি কিভাবে প্রকাশ্যে ঘুরছেন, কিংবা সত্যিই কী পুলিশ তাকে ‘খুঁজে’ পায় না! এ নিয়ে নানা প্রশ্ন সীতাকুণ্ড উপজেলার সাধারণ মানুষের।
কিশোর বয়সে ‘ডাকাত শহীদ’
অনুসন্ধানে তথ্য মিলে, এই ডাকাত সর্দার সীতাকুণ্ড পৌরসভার মধ্যম মহাদেবপুর গ্রামের গজারিয়া দীঘির উত্তর পাড়ের বাসিন্দা হতদরিদ্র জুমচাষী আবুল মুনসুরের ছেলে। এক সময় শহীদ চন্দ্রনাথ পাহাড়ে বাবার সঙ্গে জুমচাষ করতেন। মাঝেমধ্যে কাঠও কাটতেন। সেই কাঠ বাজারে বিক্রি করে সংসারের খরচ যোগাতেন। এক সময় দৈনিক ২৫০ টাকা মজুরিতে পাহাড়ের পেয়ারা বাগানের শ্রমিক হিসেবে কাহ করতেন। এক কথায় সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যেত। এভাবেই দিনমজুর হিসেবে দিন যেত তার। প্রতি বছরের ফাল্গুন মাসে সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে হিন্দু ধর্মালম্বীদের ‘শিব চতুর্দশী’ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ মেলায় সারা বিশ্বের লাখ লাখ তীর্থ যাত্রীর সমাগম ঘটে সীতাকুণ্ডে। ছোট বেলা থেকে পাহাড়ে থাকার কারণে পাহাড়ি অলিগলি, ঝোপ জঙ্গল শহীদের ভালো করেই চেনা-জানা।
যেভাবে অপরাধ জগতে শহীদের প্রবেশ
সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ পাহাড়ের জঙ্গলে একবার কেউ পালিয়ে লুকালে তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এ কথা জনমেন প্রচার রয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ২০০৯ সাল থেকে মেলায় ছিনতাই শুরু করেন শহীদ। পাহাড়ে তীর্থ পুজা করতে আসা নারীদের টার্গেট করে মূল্যবান স্বর্ণ, গহনা, জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিতে বেশ সিদ্ধহস্ত শহীদ। আর ছিনিয়ে নিয়েই দিতেন ভোঁ-দৌড়। গভীর জঙ্গলে লুকিয়ে যেত। আর পাওয়া যেত না।
যেভাবে গড়ে ওঠে শহীদ বাহিনী
বেশ কয়েক বছর নিজে নিজে ছিনতাই করলেও অল্প কিছুদিন পর শহীদ গড়ে তুলেন ১০-১৫ জনের একটি সক্রিয় ছিনতাইকারী দল। পরে শহীদের হাত ধরে সেই চক্র বিশাল সশস্ত্র ডাকাত বাহিনীতে পরিণত হয়। কাঠুরে শহীদ থেকে ডাকাত শহীদ হিসেবে পরিচিতি পায় এই যুবক। এরপর বেপরোয়া হয়ে ওঠে শহীদের ডাকাত বাহিনী। একের পর এক সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ পাহাড়ে ডাকাতি করতে থাকে তার বাহিনীর সদস্যরা। চন্দ্রনাথ পাহাড়ে শহীদ বাহিনীর কবলে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে পুজা করতে দেশি বিদেশী পর্যটকরা। আর অল্প দিনেই ডাকাতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যায় কাঠুরে ডাকাত শহীদ।
পাহাড়ে শহীদের আস্তানা
সীতাকুণ্ডে শহীদ বাহিনীর হাতে পর্যটকের মারধর, কুপিয়ে জখম, আটক করে শ্লীলতাহানি, হয়রানি, জিম্মি, মালামাল লুট হওয়ার এমন ঘটনা অহরহ। দীর্ঘ দিন ধরে শহীদ ও তার বাহিনী পাহাড়ে নিরাপদে এসব করে যাচ্ছেন। নানা কারণে এখনো ধরা ছোঁয়ার বাহিরে শহীদ। পর্যটক দলকে আটকে রেখে মোবাইল, স্বর্ণালংকার, টাকা-পয়সা, এটিএম কার্ড, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নিতো তার বাহিনী।
শহীদের ছোবল থেকে রক্ষা পেল না উপ-সচিব পরিবার ও সেনাবহিনীও
সম্প্রতি, চন্দ্রনাথ পাহাড়ে বেড়াতে এসে শহীদ বাহিনীর হাতে হেনস্তার শিকার হয়েছেন এক সরকারি উপ-সচিবের পরিবারও। পরে ঝামেলা এড়াতে সেই পরিবার কোন মামলায় জড়ায়নি। কয়েক বছর আগে এক সেনা অফিসারের সব কিছু লুটে করে নেন শহীদ বাহিনী। পেশাগত পরিচয় দিলে ডাকাত শহীদের লোকেরা কুপিয়ে জখম করে ফেলে যায় সেনা অফিসারকে। এসব ঘটনায় শহীদের বিরুদ্ধে ডজনেরও বেশি মামলা থাকলেও শহীদ বরাবরই অধরা। অবস্থা এমন যে পাহাড়ি এলাকায় শহীদ এক মূর্তিমান আতঙ্ক।
কে সেই নেতা, যার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ডাকাত শহীদ বেপরোয়া
২০১৪ সালের নির্বাচনে আগে সীতাকুণ্ডের একজন প্রভাবশালী সরকার দলীয় নেতার ছত্র-ছায়ায় চলে আসে ডাকাত শহীদ ও তার বাহিনী। স্থানীয় লোকজন প্রকাশ্যে ওই নেতার নাম মুখে নিতে নারাজ। ভয়ও রয়েছে তাঁদের। তবে এলাকার সাধারণ মানুষ ও ভুক্তভোগিদের অভিযোগের তীর বড় নেতার দিকে। যদিও প্রভাবশালী ওই নেতা সব সময় সর্বৈব অস্বীকার করেন। কিন্তু নেতার আর্শীবাদে ডাকাত শহীদ এতটাই বেপরোয়া যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো তার নাগালের বাহিরে রয়েছে।
পাহাড়ে রয়েছে শহীদের নিজস্ব টর্চার সেল
খুন, গুম, ধর্ষণ ও পাহাড়ে পেয়ারা বাগানে নিজস্ব টর্চার সেল তৈরি করেছেন ডাকাত শহীদ। ওই সেলে জিম্মি করে চাঁদা আদায়, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, অস্ত্র দিয়ে ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল, ছিনতাই, মহা সড়কে ডাকাতি, ভাঙচুর, হামলা, লুটপাট, চাঁদাবাজি, পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণ ও অন্যের জমি জবর দখল করা শহীদ বাহিনীর নিত্য দিনের কাজ।
ডাকাত মুছতে নতুন অলঙ্করণ ‘যুবলীগ’ পদ
সীতাকুণ্ডের প্রভাবশালী ওই নেতার প্রশ্রয়ে ডাকাত শহীদ এখন নিজেকে যুবলীগ নেতা পরিচয় দিতে শুর করেন। সুযোগ বুঝে ভাগিয়ে নেয় সীতাকুণ্ড পৌরসভা যুবলীগের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সহ-সভাপতি পদ। তারপর থেকে ডাকাত শহীদ ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিতে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। শুরু হয় একই ওয়ার্ডের যুবলীগের সভাপতি প্রভাবশালী নেতা সৈয়দ দাঊদ সম্রাটের সাথে দ্বন্দ্ব। যুবলীগ নেতা দাউদ সম্রাট একই এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম আবুল হোসেনের ছেলে। প্রায় সময় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া, হামলা, গুলিবর্ষণের ঘটনা বিভিন্ন সময়ে মিডিয়ায় প্রচার হয়।
যেভাবে খুন হয় শহীদের ভাই
সময়টা ২০১৮ সালের জুলাই মাস। সীতাকুণ্ডের ৪ নম্বর ওয়ার্ড ভূঁইয়া পাড়ায় দুটি পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সংঘর্ষে ডাকাত শহীদের ছোট ভাই টিটু গুরুতর আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার ভাইয়ের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার জন্য দাঊদ সম্রাট ও তার অনুসারীদের আসামী করে আদালতে মামলা করে শহীদ। এরপর আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পাহাড় সংলগ্ন ভূঁইয়া পাড়া গ্রামের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ।
এরপর যেভাবে খুন হন যুবলীগ নেতা দাঊদ সম্রাট
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দলীয় নেতারা দুই বলয়ে অবস্থান নেন। প্রধান বলয়ে যুবলীগ নেতা দাঊদ সম্রাট ও দ্বিতীয় বলয়ে ডাকাত শহীদ। দ্বন্দ্ব আর ভেদাভেদ ভুলে সরকার দলীয় পক্ষে দুই বলয় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার সম্মত হন। যথারীতি ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁরা দুজন একই সাথে কাজও করেন। দুজনের এমন মেলবন্ধন, গাঁ মাখামাখি দেখে স্থানীয়রা ভাবতে শুরু করেন এলাকায় আর কোন অশান্তি, হানাহানি দানা বাঁধবে না।
কিন্তু এলাকাবাসীর সেই স্বপ্ন-আশায় গুড়ে বালি। ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের পরদিন ৩১ ডিসেম্বর বিকাল ৪ টায় সীতাকুণ্ডের নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য কে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ ফের সংঘর্ষে লিপ্ত হন। রেল গেইট এলাকা থেকে ডাকাত শহীদ দাঊদ সম্রাটের অনুসারী যুবলীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন কে ধাওয়া করতে করতে ভোলাগিরী আশ্রমের দত্তবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে নিয়ে যান। এসময় যুবলীগ নেতা দাঊদ সম্রাট তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে শহীদ ও তার বাহিনীর সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে দাঊদ সম্রাটকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেন।
এ ঘটনায় যুবলীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন গুরুতর আহত হন। দাঊদ সম্রাটের মা জেবুন্নেছা বেগম বাদী হয়ে ১৪ জনকে আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন-ডাকাত রুবেল, ইয়াবা জুয়েল, জয়নাল, গাজা সাহাবুদ্দিন, বোমা লিটন, রুমন দে, নুর উদ্দিন, জিসান।
পাহাড়ে আত্মগোপনে ডাকাত শহীদ
যুবলীগ নেতা দাঊদ সম্রাট হত্যা সীতাকুণ্ডের রাজনীতিতে বড় ধরণের মেরুকরণ আসে। আলোচিত এ হত্যার ঘটনার পর ডাকাত শহীদ ও তার বাহিনী পাহাড়ে গা ঢাকা দেন। দীর্ঘদিন আত্মগোপনে চলে যান। এ সময়ের মধ্যে ডাকাত শহীদ ও তার দলবলকে পাহাড়ে নিত্য প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র যোগান দিতেন সীতাকুণ্ডের ওই প্রভাবশালী নেতা। যার ব্যাপারে কেউ মুখ না খুললেও সুষ্ঠু তদন্ত আর গোয়েন্দা বাহিনীর অনুসন্ধানে সকল তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে যদিও স্থানীয়রা জানান। ওদিকে, আত্মগোপনে থাকাকালীন সময়েও পাহাড়ে পর্যটকদের সব কিছু লুটে নিতেন শহীদ বাহিনী।
এক সময় ডাকাত শহীদসহ তার বাহিনীর সদস্যরা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বিচারক সবাইকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে জেল কাটেন। পরে জামিনে মুক্ত হয় শহীদ ও তার বাহিনীর সদস্যরা। এরপর আবারও শুরু করেন নানা অপকর্ম। যেন কয়লা ধুলেও ময়লা যায় না। পুনরায় এলাকা জুড়ে প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন। যুবনেতা হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। গত ৬ এপ্রিল সীতাকুণ্ডের কলেজ রোডের রেলগেইট এলাকায় আকিবুল হাসান প্রকাশ সায়েম নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করে শহীদ ও তার পালিত বাহিনী। যুবকের শরীরে ৪৬ সেলাই হয়। এ ঘটনায় আবারও ডাকাত শহীদ (৩৩) সহ ৪ সহযোগীকে আসামী করে থানায় মামলা হয়। কিন্তু বরাবরেই অদৃশ্য ক্ষমতার ঈশারায় এবারও অধরা তিনি।
সীতাকুণ্ড থানা সূত্রে জানা যায়, ডাকাত শহীদের বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ড থানায় খুন, গুম, ধর্ষণ, অস্ত্র, নারী নির্যাতন, ছিনতাই, ডাকাতি, জবর দখল, হামলা, মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ১৯ টি মামলা রয়েছে। সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-৮(৫)১৭ ধারা-৩৮৫, সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-৩৬(৪)১০, ধারা ৩৯৫/৩৯৭, সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-৩৮ (৭) ১৮ ধারা-৩০৭/১৪৩/৪৪৮/৩২৩/৩৭৯/৪২৭/৫০৬, সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-২৮(৪)১৫ ধারা-১৪৩/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৭৯/৫০৬, সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-২৪ (৩) ১০ ধারা-৩৯৫/৩৯৭/৪১২, সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-২৫ (৩) ১০ ধারা-অস্ত্র আইনের ১৯, সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-১৫ (৩)১৭ ধারা-৩৪১/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৬৪/৩৭৯/৩৪, সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-১৫(৬)০৯ ধারা ৩৯২, সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-২(৭)০৯ ধারা-আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ ৪/৫, সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-৮(৬)১৯ ধারা-১৪৩/৩২৬/৩০৭/৩০২/৩৪, সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-৩৭(৭)১৮ ধারা-৩০৭/১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৫/৩৭৯/৫০৬, সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-১৯ (৫)১৭ ধারা-১৪৩/৩৪২/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৫০৬, সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-১৫(৩)১৬ ধারা-৩৯৫/৩৯৭, সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-১৬(১২)১৫ ধারা-৩৯৯/৪০২, সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-১৭(১২)১৫ ধারা-১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩০৭/৩৮৫/৩৭৯/৫০৬, সীতাকুণ্ড মডেল থানার মামলা নং-৩(১)১০ ধারা-৭/৩০ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন। এছাড়াও নগরীর বিভিন্ন থানায়ও মামলা থাকতে পারে বলে পুলিশ জানান।
এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘শহীদের বিরুদ্ধে দাঊদ সম্রাট খুনসহ থানায় ১৯ টি মামলা রয়েছে। তা ছাড়া বাদীকে তুলে নিয়ে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেওয়াসহ নানা কাহিনী আমরা পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি। এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর অপরাধী যেই হোক না কেন? কাউকে ছাড় দেবে না পুলিশ। এখানকার ভৌগলিক অবস্থা একটু ভিন্ন পাহাড়ি জনপদ। তবে সকলেই জানেন-তাকে কে ছায়া দেয়? শহীদের বটবৃক্ষ কোথায়? নামের আগে নতুন বিশেষণ যোগ হলেও ডাকাত শহীদ একজন অপরাধী। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। ওসির সুরে একই কথা জানালেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সীতাকুণ্ড সার্কেল) এবিএম নায়হানুল বারীও।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) সুদীপ্ত সরকার পিপিএম বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ এতটাই দুর্বল নয় যে, ১৯ মামলার আসামি প্রকোশ্যে ঘুরবে আইনের আওতায় আনা হবে না। প্রকৃতপক্ষে ডাকাত শহীদ পাহাড়ে অবস্থান করায় একটু দেরি হচ্ছে হয়তো। তবে আমাদের পুলিশ সুপার এস.এম শফিউল্লাহ বিপিএম (সেবা) মহোদয়ের স্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে, যে কোন মূল্যে অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে হবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন