২২ ঘণ্টার ‘টেপিড পাঞ্চ’ সমাপ্ত, উদ্ধার হল বিপুল বিস্ফোরক
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা শহরের বামনপাড়া এলাকার জঙ্গি আস্তানায় পরিচালিত ‘অপারেশন টেপিড পাঞ্চ’ সমাপ্ত ঘোষণা করেছে পুলিশ। শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে ২২ ঘণ্টার এ অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন খুলনার অতিরিক্ত ডিআইজি হাবিবুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, জঙ্গি আস্তানা থেকে ১০ কেজি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযান শতভাগ সফল হয়েছে এমনটি দাবি করে খুলনা রেঞ্চের অতিরিক্ত ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় এ ধরণের অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে। কোনো প্রকার রক্তপাত ছাড়াই এ অভিযান সফল হয়েছে।’
বিকেল পৌনে ৫ টার দিকে ঢাকা থেকে পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কয়েক দফা বাড়িটি রেকি করার পর বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে খুলনা রেঞ্চের অতিরিক্ত ডিআইজি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ওই বাড়িতে অভিযান শুরু করে।
অভিযান চলাকালে সন্ধ্যা ৬টা ৮ মিনিট, ৬ টা ৪৬ মিনিট, রাত ৮ টা ৩৬ মিনিট এবং রাত ৮ টা ৫০ মিনিটে চারটি শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। তবে অভিযান শুরুর আগে ওই জঙ্গি আস্তানার চারপাশে ৫০০ মিটার এলাকাজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন।
কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার এস এম মেহেদী হাসান জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে কাউন্টার টেররিজমের একটি ইউনিট জানতে পারে ভেড়ামারা তালতলা মসজিদের পাশে একটি বাড়িতে জঙ্গিরা অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এডিসি আব্দুল মান্নানসহ কুষ্টিয়া ভেড়ামারা থানা পুলিশ, কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের একটি যৌথ টিম সেখানে অবস্থান নেয়। রাত ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিট যৌথভাবে অভিযান চালালে একজন নারী সুইসাইড ভেস্ট পরিহিত অবস্থায় পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা চালায়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা সেটি বিস্ফোরিত হওয়ার আগেই তাকে ধরে ফেলে। পরে পর্যায়ক্রমে আরো দুই নারীকে আটক করে। তাদের সঙ্গে দুই শিশু সন্তানও রয়েছে।
আটককৃত তিনজন জঙ্গি নারীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা বর্তমানে নব্য জেএমবির আমীর আইয়ুব বাচ্চু ওরফে সজিবের স্ত্রী তিথি ও নব্য জেএমবির সেকেন্ড ইন কমান্ডার তালহার স্ত্রী সুমাইয়া ও আরমান আলীর স্ত্রী টলি আরা।
বাড়ির মালিক নাসিমা খাতুন জানান, দর্জির কাজ করার কথা বলে বাসা ভাড়া নেয় জঙ্গি টলি। গত ১১ নভেম্বর এক মেয়েসহ আরমান ও টলি বাসা ভাড়ার নেওয়ার জন্য আসেন। তাদের বাড়ি ভেড়ামারা উপজেলার কুচিয়ামোড়া এলাকায় বলে জানান।
তিনি আরো জানান, বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় তারা সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছিলেন। সেগুলো থানায় জমাও দেওয়া হয়েছিল।
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর হোসেন খন্দকার বলেন, বাড়িটির মালিক মাসুদ নামে এক ব্যক্তি। তিনি বয়স্ক। দুই মাস আগে তার স্ত্রী নাসিমা খাতুন বাড়িটি মাসিক ১২শ’ টাকায় বাড়িটি ভাড়া দিয়েছিলেন। আরমান ও টলি দম্পতি বাড়িটি ভাড়া নেন। তারা স্বামী-স্ত্রী থাকার কথা বলেছিলেন। কিন্তু বাড়িতে কোনও পুরুষ সদস্য পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও জানান, বিকেলে বাড়ির মালিক নাসিমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করেছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন