২৭০০ ইউনিয়নে বিনামূল্যে ৩ মাস ইন্টারনেট সেবা
দেশের ২ হাজার ৭০০টি ইউনিয়নে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা দিতে কানেক্টিভিটি বা সংযোগ তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এখন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ একমত হলে ইউনিয়নগুলো থেকে গ্রামে গ্রামে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া সম্ভব হবে। যদি ট্রান্সমিশন (ব্যান্ডউইথ পরিবহন) খরচ না নেয়া হয় তাহলে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৩ মাস বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা দেবে। তবে এরপর ইন্টারনেটের খরচ গ্রামবাসীকে বহন করতে হবে।
উল্লেখ্য, সরকারের আইসিটি বিভাগের ইনফো সরকার-৩ প্রকল্পের আওতায় দেশের ইউনিয়নগুলোতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারি- বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) মডেলে এই কাজটি করেছে আইসিটি বিভাগ ও নেশনওয়াইড ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক বা এনটিটিএন (মাটির নিচ দিয়ে তৈরি ক্যাবল সংযোগ) প্রতিষ্ঠানগুলো।
জানা গেছে, দেশের ২ হাজার ৭০০টি ইউনিয়নে এরই মধ্যে কানেক্টিভিটি তৈরির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে এই প্রকল্পের বাকি কাজ শেষ হওয়ার কথা।
সম্প্রতি এই সেবাদানের বিষয়ে আইসিটি বিভাগে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আইসিটি বিভাগ, এনটিটিএন প্রতিষ্ঠান এবং আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে ইউনিয়নগুলো থেকে ‘ক্যাপাসিটি’ সরবরাহের কথা বলা হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সংশ্লিষ্টদের ৩ মাস বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবাদানের আহ্বান জানান। এই আহ্বানে আইএসপিগুলো সাড়া দিলেও এনটিটিএনগুলো এখনও ইতিবাচক কোনো সাড়া দেয়নি। এনটিটিএনগুলো ইতিবাচক সাড়া দিলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নগুলো থেকে প্রয়োজনীয় সব জায়গায় বিনা খরচে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে আইএসপিগুলো।
বৈঠক সূত্র আরো জানায়, প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই সেবার ক্ষেত্রে ‘লাস্ট মাইল কানেক্টিভিটি’ (ডেলিভারি পয়েন্ট থেকে চূড়ান্ত ব্যবহারকারীদের কাছে) দেবে আইএসপিগুলো। এই ঘোষণার ফলে এনটিটিএন প্রতিষ্ঠানগুলোর আর এই সেবা দেওয়া হবে না, আইএসপিগুলোই দেবে।
জানতে চাইলে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি’র সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক বলেন, আমরা বৈঠকে বলেছি এনটিটিএন প্রতিষ্ঠানগুলো যদি কোনও ট্রান্সমিশন খরচ না নেয় তাহলে আমরা ‘টেস্ট রান’ ভিত্তিতে ৩ মাস বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা দেবো। আমরা স্থানীয় স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, সরকারি অফিস, পাঠাগার, ইউনিয়ন ডিজটাল সেন্টার (ইউডিসি) ইত্যাদিতে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেবো।
ইমদাদুল হক জানান, টেস্ট রান বা পরীক্ষামূলক ব্যবহার সফল হলে তারা পরিপূর্ণভাবে সেবা দিতে প্রস্তুতি নেবেন। তিনি জানান, টেস্ট রানের সময় কোনও ধরনের সমস্যা আছে কিনা, জটিলতাগুলো কী কী, তা নির্ধারণ করা যাবে এবং পরে তা সমাধান করে নিরবছিন্ন সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়নগুলোতে ২০ জিবিপিএস (গিগা বিটস পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ এখন রেডি অবস্থায় রয়েছে। এখান থেকে ক্যাপাসিটি নিয়ে আইএসপিগুলো সেবা দিতে পারবে। বিনামূল্যে সেবা দেয়ার পরে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষকে কত খরচ করতে হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
ইন্টারনেটের দাম নির্ধারণ করাও জরুরি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বরাবরই দাবি রয়েছে, গ্রামে ঢাকার দামে ইন্টারনেট। এটা বাস্তবায়ন করা যাবে কিনা তা নিয়েও চলছে বিশ্লেষণ। ঢাকার দামে গ্রামে ইন্টারনেট দিতে গেলে কী কী বাধা আসতে পারে তা-ও বিবেচনায় রয়েছে সংশ্লিষ্টদের। সে ক্ষেত্রে সবার আগে এনটিটিএন প্রতিষ্ঠানগুলোর ট্রান্সমিশন চার্জ কমানোর ইস্যুটি সবার আগে চলে আসবে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন