২ বছরে ৭ বিয়ে, একের পর এক স্বামীদের বোকা বানিয়েছেন এই নারী!
ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের। সেখানে বাস্তবেই যেন হিন্দি সিনেমা ‘ডলি কি ডোলি’! এই সিনেমার আদলে পাত্রী একের পর এক বিয়ে করে টাকা, গয়না হাতিয়ে নিয়েছেন প্রত্যেক পাত্রের বাড়ি থেকে। ঊর্মিলা আহারিবা নামের ওই নারীর এমন প্রতারণার কাছে সহায়তা করেছে তার গড়ে একটি গ্যাং। যারা পাত্রপক্ষের কাছে নিজেদের পাত্রীর বাবা-মা-ভাই হিসেবেই পরিচয় দিতেন। তারা এমনভাবে নিজেদের উপস্থাপন করতো যে কেউই বুঝতে পারতো না এরা বড়সড় একটা চক্র।
জানা গেছে, ২৮ বছরের ঊর্মিলার ইশারাতেই গোটা গ্যাং পরিচালিত হত। অষ্টম শ্রেণি পাশ করা এই নারী মধ্যপ্রদেশের জবলপুরের ধনবন্তপুরের বাসিন্দা। ২০ বছর বয়সেই অজয় আহিরবারের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায় ঊর্মিলার। কিন্তু বিয়ের কয়েক দিনের মধ্যেই মৃত্যু হয় অজয়ের। আচমকা স্বামীকে হারিয়ে অথৈ জলে পড়েন ঊর্মিলা। বাবারবাড়ি চলে আসেন তিনি। জামাকাপড় সেলাই করে নিজের খরচ চালাতেন। এই সময়ই ভাগচন্দ নামে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। ওই যুবক রাজস্থানের বাসিন্দা। প্রতিবেশী অর্চনা বর্মণের মাধ্যমে এরপর শ্যাম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গেও পরিচয় হয় ঊর্মিলার। তাদের দলে অমরসিংহ পটেল নামে এক ব্যক্তিও যোগ দেন। প্রত্যেকেরই টাকার প্রয়োজন ছিল। ফলে টাকা হাতানোর জন্য একটি দল তৈরি করেন তারা। ঊর্মিলার বয়স যেহেতু কম, তাই তাকেই হাতিয়ার করে লুটের ব্যবসায় নামে দলটি।
যাদের বিয়ে হয়নি বয়স বেশি এমন পুরুষদের খুঁজে বের করতেন তারা। তারপর ঊর্মিলাকে পাত্রী সাজিয়ে, বাকি সদস্যরা ঊর্মিলার আত্মীয় সেজে পাত্রের বাড়িতে হাজির হতেন। ঊর্মিলার প্রথম শিকার ছিলেন রাজস্থানের এক ব্যক্তি। বিয়ের চার মাসের পর সুযোগ বুঝে নগদ ২০ হাজার টাকা এবং গয়না নিয়ে চম্পট দেন ঊর্মিলা। নতুন নতুন শিকার জোগাড়ের কাজ ছিল শ্যামের। তার মাধ্যমেই মধ্যপ্রদেশের সাগরে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের ১৫ দিনের মধ্যেই ২২ হাজার টাকা ও গয়না নিয়ে উধাও। এরপর মধ্যপ্রদেশেরই দমোহতে তৃতীয় বিয়ে করেন। বিয়েতে পাওয়া ১৭ হাজার টাকা নিয়ে গা ঢাকা দেন ঊর্মিলা। চতুর্থ বিয়ে করেন রাজস্থানের রাজাখেড়ায়। পঞ্চম এবং ষষ্ঠ বিয়ে করেন রাজস্থানেরই ধৌলপুর এবং জয়পুরে।
ছয় নম্বর বিয়ে পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। কিন্তু গত ২ ফেব্রুয়ারি জবলপুরে বছর একচল্লিশের দশরথ পটেলকে বিয়ে করতে গিয়েই ফাঁদে পড়েন ঊর্মিলাসহ পুরো গ্যাং। মন্দিরে দশরথের সঙ্গে বিয়ে করেন ঊর্মিলা। তার কিছুক্ষণ পরই নগদ টাকা এবং গয়না নিয়ে পালিয়ে যান। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। প্রথমে ধরা পড়েন ঊর্মিলার প্রতিবেশী অর্চনা। তার সূত্র ধরেই এক এক করে ঊর্মিলা-সহ গোটা দলটিকে ধরেছে পুলিশ। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের হিন্দি ছবি ‘ডলি কি ডোলি’-তে ডলির ভূমিকায় এমন চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সোনম কাপুর। তিনি বিয়ে এক এক জনকে বিয়ে করতেন আর বিয়ের রাতেই টাকা, গয়না লুঠ করে পালাতেন।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন