৩৪ পয়েন্টে ওয়াসার পানি পরীক্ষার নির্দেশ হাইকোর্টের
পানির চারটি স্তরসহ ১০টি জোন, ১০টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১০টি র্যান্ডমসহ মোট ৩৪টি এলাকার নমুনা সংগ্রহ করে পানি পরীক্ষা করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালতের নির্দেশে গঠিত কমিটিকে সকল পরীক্ষা সম্পন্ন করে আগামী ২ জুলাই পরীক্ষার প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
মঙ্গলবার কমিটির অন্যতম সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাবিতা রিজওয়ানা রহমানের মতামতের ভিত্তিতে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতের নির্দেশনায় বলা হয়, এসব পরীক্ষার ব্যয়ভার করবে ওয়াসা। দেখভাল করবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
আদালতে স্থানীয় সরকারের পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন এবং রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জানায়, ঢাকা ওয়াসার ১০টি জোনের ৫৯ এলাকার পানিতে ময়লা পানির প্রবণতা বেশি।
সরকারি এই সংস্থা গত তিন মাসে ময়লা পানির অভিযোগের তালিকা বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পেয়েছে। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদনটি দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা বাসাবাড়ির ট্যাপের পানি পরীক্ষা করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল-সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পাস) জহিরুল ইসলাম বরাবর ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান ১৩ মে প্রতিবেদনটি পাঠান।
‘অনিরাপদ পানি পান করছে সাড়ে সাত কোটি মানুষ’ শিরোনামে গত বছরের ১২ অক্টোবর গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিতে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ১৪ অক্টোবর রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ৬ নভেম্বর রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন আদালত।
রাজধানী ঢাকায় পাইপের মাধ্যমে সরবরাহ করা ওয়াসার পানির মান পরীক্ষায় চার সদস্যের কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
কমিটিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, আইসিডিডিআরবি, বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের একজন করে প্রতিনিধি রাখতে বলা হয়। কমিটিকে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে। প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর আদালত এ বিষয়ে মতামত দিতে কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান সাবিতা রিজওয়ানা রহমানকে আজ আদালত উপস্থিত হতে বলেন।
আদালতে উপস্থিত হয়ে লিখিত মতামত তুলে ধরেন অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান সাবিতা রিজওয়ানা রহমান। তিনি বলেন, ‘সরবরাহ করা পানির প্রকৃত চিত্র পাওয়া সময় সাপেক্ষ, জটিল ও ব্যয়বহুল।
ওয়াসার প্রতিবেদন অনুসারে, অভিযোগের তালিকা বিশ্লেষণ করে যেসব এলাকায় ময়লা পানি পাওয়ার প্রবণতা বেশি লক্ষ করা যায় সেসব এলাকা হচ্ছে: যাত্রাবাড়ী, বাসাবো, মুগদা, রাজারবাগ, কুসুমবাগ, জুরাইন, মানিকনগর, মান্ডা, দোলাইরপাড় ও মাতুয়াইল, ভাগলপুর, লালবাগ, বকশীবাজার, শহীদনগর, জিগাতলা, ধানমন্ডি, শুক্রাবাদ, কলাবাগান, ভূতের গলি, মোহাম্মদপুর, শেওড়াপাড়া, পীরেরবাগ, মণিপুর, পাইকপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর, মহাখালী, তেজগাঁও, সিদ্ধেশ্বরী, শাহজাহানপুর, খিলগাঁও, মগবাজার, নয়াটোলা, রামপুরা, মালিবাগ, পরিবাগ, কদমতলী, দনিয়া, শ্যামপুর, রসুলবাগ, মেরাজনগর, পাটেরবাগ, শনিরআখড়া, কোনাপাড়া, মুসলিম নগর, বাড্ডা, আফতাবনগর, বসুন্ধরা, ভাটারা, উত্তরা, খিলক্ষেত, ফায়েদাবাদ, মোল্লারটেক, রানাভোলা, কাফরুল, কচুক্ষেত, পল্লবী।
অভিযোগ পাওয়ার পর পাইপলাইনের ছিদ্র মেরামত করে ময়লা পানির অভিযোগ নিরসন করা হয় বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন