৫ জানুয়ারি ঘিরে ফের মুখোমুখি আ’লীগ-বিএনপি
আগামী ৫ জানুয়ারি রাজধানীতে সমাবেশ করতে চায় রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি। সমাবেশের অনুমতির জন্য প্রশাসনের কাছে ঠিঠি দিয়েছে দলটি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও ওই দিন রাজধানীতে দুটি পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। গত তিন বছরের মতো এবারও এই দিনটিকে কেন্দ্র করে কর্মসূচি ঘোষণা করায় দল দুটি মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। দিবসটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ আখ্যা দিয়ে ঢাকা মহানগরীতে সমাবেশ এবং সারাদেশের জেলা, উপজেলা ও মহানগরগুলোতে কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। একই দিন ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে আওয়ামী লীগ। সারা দেশে শোভাযাত্রা ও সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন এই দলটি।
ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম বলেন, ‘আমরা সমাবেশ করতে চাই। এর জন্য প্রশাসনের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নামসর্বস্ব একটি দলকে নাকি সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা বলেছি, ওখানে না হলে আমাদের পার্টি অফিসের সামনে অনুমতি দেওয়া হউক।’
তিনি বলেন, ‘ আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চাই। প্রশাসনের অনুমতির অপেক্ষাই আছি, দেখা যাক তারা কী করেন।’
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে চাই, সরকার বিএনপির গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি সম্মান জানাবে। অনুমতি দিয়ে বিএনপিকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের সুযোগ করে দিবে। যদি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি না দেয়া হয়, তাহলে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
সভা-সমাবেশ করা রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকার দাবি করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসার পর থেকে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে চলেছে। বিএনপিকে সভা-সমাবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে বারবার।’
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল। ‘একতরফা’ নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এর পর থেকে প্রতি বছরই এই দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের কর্মসূচি হাতে নেয় বিএনপি। এবারো সারা দেশে কালো পতাকা মিছিল ও ঢাকায় সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। কিন্তু গত বছরের মতো এবারও সমাবেশের অনুমতি নিয়ে ‘অন্ধকারে’ বিএনপি। এর মধ্যে দলের পক্ষ থেকে বিকল্প ভেন্যুতে সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চেয়ে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। তবে প্রসাশনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো সাড়া পায়নি দলটি।
তবে গত মঙ্গলবার ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনেকটা চ্যালেঞ্জের মুখে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ছাত্রসমাবেশ করা হয়। দিনভর নাটকীয়তা শেষে সন্ধ্যার পর কর্তৃপক্ষের ‘নমনীয়তায়’ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে সমাবেশ করে ছাত্রদল। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
অন্যদিকে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চতুর্থ বর্ষপূর্তির দিনে দেশব্যাপী ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উদযাপন করবে আওয়ামী লীগ। সংগঠনের জেলা, মহানগর, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে বিজয় র্যালি ও সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ওইদিন বিকাল ৩টায় বনানী মাঠে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর এবং ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ প্রাঙ্গণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিজয় র্যালি ও সমাবেশ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ঘোষিত কর্মসূচি যথাযথভাবে পালনের জন্য দেশের সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা ও থানা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একইসঙ্গে দেশের সর্বস্তরের জনগণকে গণতন্ত্রের বিজয়ের এই ঐতিহাসিক দিনটি উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের জন্য বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামিক পার্টি নামক একটি রাজনৈতিক দল প্রশাসনের পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন