৫ জুলাই বিশিষ্ট নজরুল সংগীতশিল্লী জুলি শারমিলীর শুভ জন্মদিন
বুধবার (৫ই জুলাই) বিশিষ্ট নজরুল সংগীত শিল্পী জুলি শারমিলীর শুভ জন্মদিন। জন্মদিনে পরিবার, গান নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হলো এ প্রতিবেদকের।
প্রতিবেদক: জন্মদিন আপনার কেমন লাগছে?
শিল্পী জুলি: ভালোই লাগছে।
প্রতিবেদক: আপনার জন্মদিন ছোটবেলায় কিভাবে পালন করা হতো?
শিল্পী জুলি: ঘরোয়াভাবে হলেও, বেশ জাঁকজমকপূর্ণভাবে। আমার নানী বিভিন্ন দেশ থেকে সারাবছর নানান ধরণের উপহারসামগ্রী লুকিয়ে রাখতেন। জন্মদিনে একসাথে অন্তত প্রায় শ খানেক উপহার সামগ্রী মিলতো। আর আমার মা এক সপ্তাহ যাবত নানা পরিকল্পনা করতেন রান্না বাড়ার। মা ভীষণ ভোজনরসিক ছিলেন। তিনি পুরো টেবিল ভরেই রান্না করতেন। আর আমার নানা তিনি ঢাকার এমন কোন বেকারি নেই, যেখান থেকে তিনি আমাকে কেক কিনে খাওয়াননি। আমার প্রতিটি জন্মদিনই ভীষণ উপভোগ্য ছিলো। এখনও আরেকভাবে উপভোগ করি আমার পরিবার ও আমার শ্রোতাদের সাথে।
প্রতিবেদক: আপনার শিক্ষাজীবন সম্পর্কে কিছু বলুন-
শিল্পী জুলি: আমি বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি ও এইচএসসি করে উদ্ভিদবিজ্ঞানে মাস্টার্স করেছি। কিছুদিন কলেজেও শিক্ষকতা করেছি।
প্রতিবেদক: আপনি কার কার কাছে গান শিখেছেন?
শিল্পী জুলি: আমার হাতেখড়ি মধুমোহন দাসের কাছে। পরে ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক, সনজীদা খাতুন, অদিতি মহসিন, রাম কানাই দাশ, জহির আলিম, লাইসা আহমেদ লিসা, সুমন চৌধুরী। সংগীতভবনে কলিম সরাফি, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, সাদি মুহম্মদ, হাসি বিশ্বাস প্রমুখের কাছে গান শিখেছি। আজাদ রহমান, নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরীর কাছে দীর্ঘদিন গান শিখেছি।
প্রতিবেদক: আপনার রোজকার রুটিন কী?
শিল্পী জুলি: বেশিরভাগ সময় গান শুনে সময় কাটে। কোনোদিন ভাবিনি, জীবনে এমন দিন দেখতে হবে। বই পড়ি, গান শুনি, লেখালেখি করি। তবে মনোযোগ দিতে পারি না। মানসিকভাবে বেশ বিপর্যস্ত। কাল কী হবে বুঝতে পারছি না। তারপরও সংগীতচর্চা, ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা এবং সংসারের কাজের মধ্যেই সময় পার হয়ে যায়।
প্রতিবেদক: গান শুনেন তো? কোন ধরণের গান আপনার ভালো লাগে?
শিল্পী জুলি: গান আমি খুবই শুনি। নতুন শিল্পীদের যাঁরা টেলিভিশনে গাইতে আসে, সবার গানই কমবেশি শোনা হয়, উচ্চাঙ্গ সংগীতের প্রতি একটা দূর্বলতা আছে। তাই কারো কণ্ঠে ক্ল্যাসিক্যাল শুনলে মনটা ওদিকেই চলে যায়। খুব শুনতে ইচ্ছে করে। ক্ল্যাসিক্যাল গানের প্রচুর রেকর্ডস এবং সিডি ও আমার আছে। তাছাড়া ইউটিউবে প্রচুর গান শুনার সুযোগ আছে। সেখান থেকেও প্রচুর দেশি-বিদেশী গান শুনা হয় আমার।
প্রতিবেদক: একদম তরুণদের গানও শোনা হয় তাহলে। কেমন লাগে? কোনো পরামর্শ আছে কি?
শিল্পী জুলি: টিভিতে গাইছে যাঁরা তাদের গান শুনি। কয়েকজনের কণ্ঠ তো অপূর্ব। কিন্তু যেটা আমি সবসময় ফিল করি, আরেকটু বোধ হয় সাধনার দরকার। বেশিরভাগের যেন প্রকাশ করার ইচ্ছাটাই বেশি। কখন সাজগোজ করে টেলিভিশনে গান করব, এই প্রবণতাই যে বেশি। সবার দৃষ্টিতে আসার আগে দরকার নিজেকে তৈরি করা। অল্পদিনেই নামধাম করে ফেলা যায়, কিন্তু টিকে থাকার জন্য সাধনার বিকল্প নেই। একটা জায়গায় ওঠে গেলে, যদি ভিত না থাকে তাহলে তো নিচে পড়তে হবে। টিকে থাকাটাই অনেক কঠিন। তাই নতুনদের বেশি করে ভয়েজ ট্রেনিংটা আরেকটু দরকার।
প্রতিবেদক: শ্রোতা-দর্শকদের জন্য কিছু বলুন-
শিল্পী জুলি: শ্রোতা-দর্শকরাই হলেন একজন শিল্পীর প্রাণ। আপনাদের কারণেই আমি এতদূর আসতে পেরেছি। আপনারা সবাই নিরাপদে সুস্থ থাকবেন। বেশি বেশি করে গান শুনবেন, মনকে প্রফুল্ল রাখবেন। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, যেন আপনাদের আরও সুন্দর গান উপহার দিতে পারি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন