৬ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি, মিলল শিশুর লাশ!

দিনমজুর আশরাফুল মিয়ার মেয়ে রোকসানা নিখোঁজ হয় গত মঙ্গলবার। শিশুটি তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। পরদিন এক ফোনের মাধ্যমে মাত্র ছয় হাজার টাকা ‘মুক্তিপণ’ দাবি করে দুর্বৃত্তরা। এদিক ওদিক করে টাকা জোগাড়ও করেন আশরাফুল মিয়া।

মেয়েকে পেয়েছেন আশরাফুল মিয়া, কিন্তু ওই শিশুর দেহে প্রাণ ছিল না। দুই হাত ও পা ছিল বাঁধা, মুখে ছিল স্কচটেপ। ছোট শরীরটা ছিল বস্তার ভেতর! বস্তাটা পাওয়া যায় মেঘনা নদীর চরে!

শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের সোনরগাঁ উপজেলার কাইক্কারটেক চর এলাকা থেকে ওই শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত রোকসানা সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার গোদনাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। পুলিশের ধারণা, রোকসানাকে অন্য কোথাও শ্বাসরোধ করে হত্যার পর গভীর রাতে মেঘনা নদীর চরে ফেলে দেয়া হয়েছিল।

স্থানীয় বাসিন্দা ও রোকসানার স্বজনরা জানান, গত মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয় এক বখাটে যুবক রোকসানাকে বাসা থেকে ডেকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরদিন অজ্ঞাত ব্যক্তি তার বাবা আশরাফুল মিয়ার মোবাইলে ফোন করে ছয় হাজার টাকা মুক্তিপণ চায়। দিনমজুর আশরাফুল মিয়া মেয়েকে ফিরে পেতে মুক্তিপণের টাকা যোগাড় করার প্রস্তুতি নিতে থাকেন। কিন্তু পরে টাকা দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করলে ওই মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ওইদিন রাতেই এ ব্যাপারে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন স্থানে মেয়েকে খুঁজতে থাকেন। দুপুরে সোনারগাঁয়ের কাইক্কারটেক সেতুর নীচে বস্তাবন্দি অবস্থায় শিশুর লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। রোকসানার স্বজনরা মর্গে এসে লাশ শনাক্ত করেন।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) শরফুদ্দিন আহমেদ জানান, তাঁদেরই পূর্ব পরিচিত কেউ এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তারপরেও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। দ্রুত জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।