৭ লাখ টাকা ১টি রেইনট্রি গাছ! হার মানিয়েছে বালিশ কাহিনীকেও
বিশ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৭ ফুট প্রস্থের একটি রেইনট্রি গাছ যার বর্তমান বাজারমূল্য সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার টাকা। স্থানীয়দেরও ধারনা কোনভাবেই গাছটির মূল্য ৩৫ হাজারের উপরে উঠার কোন সম্ভাবনা নাই। কিন্তু ৩৫ হাজারের সেই রেইনট্রি গাছের মূল্য ও ক্ষতিপূরণ বাবদ মোট মূল্য ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার পায়রা সেতুর (লেবুখালী) নদীর তীর রক্ষা প্রকল্পের আওতায় ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে।
অভিযোগে প্রকাশ, লেবুখালী ফেরিঘাট এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য ইউনুস ফরাজীর লেবুখালী মৌজার ৮৬৮ নম্বর দাগে একটি রেইনট্রি গাছের ক্ষেত্রে এ মূল্য ও ক্ষতিপূরণ ধরা হয়েছে। আবার প্রতি ঘনফুট কাঠের বাজার মূল্য ৬’শ থেকে ৭’শ টাকা হলেও পটুয়াখালীর সামাজিক বনায়নন নার্সারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মাহবুব আলম প্রতি ঘনফুট কাঠের দাম ধরেছেন ১৫শ’টাকা। আবার বাস্তবে গাছটির দৈর্ঘ্য ২০ ফুট এবং প্রস্থ ৭ ফুট হলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব আলম গাছটির দৈর্ঘ্য ৩০ ফুট প্রস্থ ১১ফুট নির্ধারণ করেছেন। এতে গাছটির দাম বাজারদরের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি ধরা হয়েছে।
এদিকে ৩৫ হাজার টাকার একটি রেইনট্রি গাছের দাম প্রায় ৭ লাখ টাকা নির্ধারণ করায় স্থানীয়দের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি সার্ভেয়ার এবং বনায়ন কর্মকর্তারা বিপুল টাকা ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে গাছ এবং জমির মূল্য নির্ধারণ করেছেন।
এদিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য ইউনুস ফরাজীর জমিতে ৭০ হাজার টাকার বিলাতী গাব গাছের হিসাব দেখান হলেও বাস্তবে মাত্র একটি গাছের সন্ধান পাওয়া গেছে যার বাজারমূল্য হতে পারে সর্বোচ্চ ৬ হাজার টাকা। এছাড়াও আম গাছ ও তুলা গাছের মূল্য নির্ধারণ করা হলেও বাস্তবে এসব গাছের কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এদিকে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয় তুহিন ফরাজী, শাজাহান ঘরামি, শহীদ ফরাজী, হানিফ হাওলাদার। তাদের অভিযোগ সার্ভেয়ার ও বনায়ন কর্মকর্তাদের মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে জমির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ব্যপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ইউনুস ফরাজী জানান, সার্ভেয়ার ও ফরেস্ট অফিসার পরিদর্শন করে তারাই মূল্য নির্ধারণ করেছেন এতে আমার কোন হাত নেই।
সার্ভেয়ার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আমরা শুধু সংখ্যা নির্ধারণ করেছি। গাছের মূল্য নির্ধারণ করেছেন বন বিভাগ। তবে সংখ্যা গত গরমিল থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সঠিক সংখ্যা দিয়েছি কিন্তু বন বিভাগ হয়তো পরিবর্তন করেছে।
সামাজিক বনায়ন ও নার্সারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মাহবুব আলম জানান, অনেক বড় গাছ আমি অনুমান নির্ভর দাম নির্ধারণ করেছি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন