সাতক্ষীরায় সিরজি বোমা হামলা মামলার রায়
৮ জনের ১৩ বছর, ৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড, ১ জন খালাস
সাতক্ষীরায় ২০০৫ সালের ১৭ আগষ্টের সিরিজ বোমা হামলা মামলার রায়ে ৮ আসামীকে ১৩ বছর করে সাজা দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় আরও ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। খালাস পেয়েছেন ১ জন আসামী।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারী) নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ও নীরবতার মধ্যে জনাকীর্ণ আদালতে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর পর এই রায় ঘোষনা করেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. শরিফুল ইসলাম।
রাষ্ট্রপক্ষে এই মামলা পরিচালনা করেন জজ আদালতের পিপি এ্যাড. আব্দুল লতিফ। তাকে সহায়তা করেন অতিরিক্ত পিপি এ্যাড. আব্দুস সামাদ। এ সময় তারা বলেন, সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রমান এবং আলামত জব্দের মধ্য দিয়ে প্রমানিত হয়েছে যে এ মামলার সকলেই দোষী।
রায়ে তারা সন্তোষ প্রকাশ করে আরও বলেন, এই বিচারের মধ্য দিয়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই রায়ের কারণে ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো অপরাধের সাথে কেউ জড়িত হবেন না বলে প্রত্যাশা করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
মামলায় আসামীপক্ষে ছিলেন এ্যাড. জিএম আবু বকর সিদ্দীক। তিনি আইনের বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, আসামীদের বিরুদ্ধে ৩,৪,৬ ধারা প্রযোজ্য নয়। আমরা ন্যায় বিচার পাইনি।
মামলায় বাদী সহ ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহন করা হয়। এর মধ্যে ৫টি মামলার ১৬ জন আসামীর সবাইকে খালাস এবং একটি মামলায় ২৫ আসামীর মধ্যে ১ জন আসামীকে খালাস দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য যে ২০০৫ সালের ১৭ আগষ্ট সাতক্ষীরা শহরের শহিদ রাজ্জাক পার্ক, কালেকটরেট চত্বর, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত চত্বর, হাসপাতাল মোড় ও বাস টার্মিনালসহ পাঁচটি পয়েন্টে একযোগে বোমা বিস্ফোরণ এবং জামায়াতুল মুজাহিদিন জেএমবির লিফলেট ছড়ানো হয়। সকালে এ ঘটনার পর বিকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত চত্বরে বোমা হামলাকারী শহরতলির বাঁকাল গ্রামের নাসিরউদ্দিন দফাদার প্রত্যক্ষদর্শীর দেখিয়ে দেওয়া মতে গ্রেফতার হন। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ভারতীয় নাগরিক গিয়াসউদ্দিনসহ আরও অনেক আসামি একে একে গ্রেফতার হন। পুলিশ শহরের রসুলপুরে জেএমবির ঘাঁটিতে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমান বোমার সরঞ্জাম জব্দ করে। গ্রেফতার হওয়া ১৩ আসামিকে ঢাকায় জেআইসিতে ( জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো হয়। এ সংক্রান্ত ছয়টি মামলার প্রতিটিতে সিআইডি পুলিশ ১৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশীট দেয় ২০০৬ সালের ১৩ মার্চ।
এ মামলায় আসামীদের মধ্যে রয়েছেন মনিরুজ্জান মুন্না, আনিসুর রহমান খোকন, মনোয়ার হোসেন উজ্জ্ব¦ল, মো. গিয়াসউদ্দিন, বিল্লাল হোসেন, রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, মসিউজ্জামান ওরফে মুকুল ডাক্তার, শামিম হোসেন গালিব ওরফে সাইফুল্লাহ, আবদুল আহাদ, আশরাফ মাষ্টার, আলমগীর হোসেন ওরফে আশা, মামুনুর রশীদ, ওবায়দুল ইসলাম, আসাদুল ইসলাম হাজারি, মাহবুবুর রহমান লিটন , মো. আসাদুজ্জান, মমতাজউদ্দিন, নুর আলি মেম্বর, ফখরুদ্দিন গাজি, আবুল খায়ের ও নাইমুদ্দিন। এর মধ্যে আবুল খায়েরকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। পলাতক রয়েছেন কয়েকজন আসামী। এর আগে ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর কারাগারে আটক অবস্থায় মারা যান আসামী নাসিরুদ্দিন দফাদার।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন