‘বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা ৯০ হাজার, আসামি ২৫ লাখ’

সরকার বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি শনিবার বেলা ১১টার দিকে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০০৯ সাল থেকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে ৯০ হাজার ৩৪০টি। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ২৫ লাখ ৭০ হাজার ৫ শত ৪৭ জন।

তিনি জানান, বর্তমানে মোট জেলহাজতে আছেন ৭৫ হাজার ৯২৫ জন। হত্যা করা হয়েছে ১ হাজার ৫১২ জন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা বিএনপি নেতাকর্মীর হত্যার সংখ্যা ৭৮২ জন। এছাড়া মোট গুমের হয়েছে ১২০৪ জন। এরমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে থেকে গ্রেফতার দেখানো হয় ৭৮১ জন। বিএনপির গুম ছিল ৪২৩ জন। বর্তমানে বিএনপি নেতাকর্মীদের গুমের সংখ্যা ৭২ জন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পর্যন্ত গুরুতর জখম ও আহত হয়েছে ১০ হাজার ১২৬ জন।

তিনি বলেন, এসব ঘটনা প্রমাণ করে সরকার বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার সম্ভাব্য সব চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা আরও একটি ভোটারবিহীন নির্বাচন করার জন্য কূটকৌশল হাতে নিয়েছে। সে কারণে আজকে সারাদেশে গায়েবি মামলার ছড়াছড়ি যা দেশের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই সরকার সবধরনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ নেয়ার জন্য আমরা বহুবার আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু সরকার কোনো কর্ণপাত করছেন না। তাদের উদ্দেশ্য একটাই আরও ভোটারবাহীন নির্বাচন করা। যার কারণে তারা এখন গায়েবি মামলার পথ বেছে নিয়েছে যে মামলা থেকে মৃত ব্যক্তি পর্যন্ত রেহাই পাচ্ছে না।

সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কি চমৎকার তাদের গণতন্ত্র তিনি সারাদিন বলছেন সুষ্ঠু ভোট হবে। এই হলো তাদের গণতন্ত্রের নমুনা।

বিএনপির দেয়া ৭ দফা দাবি মেনে নেয়াই হলো নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে আমাদের কারাবন্দি নেত্রীকে মুক্তি দেয়াসহ আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিলেই কেবলমাত্র সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের সকল মানুষকে সঙ্গে নিয়েই আমরা সরকারের এই সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করবো।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রমুখ।