খালেদাকে নাশকতার তিন মামলায় গ্রেফতার দেখাবে পুলিশ

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নাশকতার অভিযোগে দায়ের হওয়া তিন মামলায় ‘শ্যোন অ্যারেস্ট’ দেখানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ।

অন্যদিকে শিগগির জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের সার্টিফায়েড কপি না পাওয়ায় খালেদা জিয়ার আপিল ও জামিন আবেদনে সময় লাগছে। ফলে সহসা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুক্তি পাওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিশেষ জজ আদালত এ মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার পর পরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। এর পর থেকে তিনি সেখানেই আছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার মামলার রায় ৬৩২ পৃষ্ঠার। এ রায়ের সার্টিফায়েড কপি পেতে সময় লাগবে। আজ সোমবারও সার্টিফায়েড কপি লেখার কাজ শেষ নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে পর দিন মঙ্গলবার কপি লেখা শেষ হতে পারে। এ কপি হাতে পাওয়ার পর আইনজীবীরা এটি নিয়ে পর্যালোচনা করবেন। এর পর তারা উচ্চ আদালতে আপিল ও খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন করবেন।

এ কারণে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি লাভের বিষয়টি নিশ্চিত হতে আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় মুক্তির জন্য সেসব মামলাতেও খালেদা জিয়াকে জামিন নিতে হবে।

দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজলকে উদ্ধৃত করে রেডিও তেহরান বলেছে, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরও কিছু মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার জামিন পাওয়ার সঙ্গে অন্য মামলায়ও জামিন মিললে তার কারামুক্তি সম্ভব হবে।

এ প্রসঙ্গে বেগম জিয়ার অন্যতম আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার ইরানি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে বর্তমান সরকার আদালত ও পুলিশ ব্যবহার করে বেগম জিয়াকে কারাগারে রেখে আরেকটি একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। আর সে জন্যই এসব মিথ্যা মামলা ও জেলজুলুম চালানো হচ্ছে।

জানা গেছে, ২০১৫ সালের নাশকতার ঘটনায় কুমিল্লায় করা তিনটি মামলায় বিএনপির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা জামিন নিয়েছেন। তবে খালেদা জিয়া এসব মামলায় জামিন আবেদন করেননি।

এর একটি মামলায় খালেদা জিয়াসহ অনুপস্থিত ৪৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন আদালতে আরও ৩৬ মামলা রয়েছে। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার পরিবারের বিরুদ্ধে এসব মামলার মধ্যে ১১টি উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। কিছু মামলা রুজু হওয়ার পর আদালতের নির্দেশে প্রাথমিক তদন্ত চলছে। এ ছাড়া কয়েকটি মামলার চার্জগঠনের ওপর শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে।