টকশোর জন্য বিএনপির নীতিমালায় কী থাকছে?

টেলিভিশন অনুষ্ঠান এবং টকশোতে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার জন্য তৈরি করা হচ্ছে বিএনপির নীতিমালা। কোনো নেতা টকশো বা টিভি প্রোগ্রামে যেতে হলে এসব নিয়মনীতি মানতে হবে।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।

বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

তিনি বলেন, নির্বাচন-পরবর্তী অনেক বিষয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে টকশোর বিষয়টিও ছিল। বিভিন্ন টকশোতে যারা পার্টির প্রতিনিধিত্ব করেন বলে বলা হয়, তারা কতটা উপযুক্ত, তাদের প্রস্তুতি কেমন, কাদের সঙ্গে যাচ্ছেন, তারা তথ্যনির্ভর কথা বলছেন কি না সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, অনেকে আছে সাবেক নেতা বা বিএনপির নেতা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়, কিন্তু তারা আসলে হয়তো এখন আর বিএনপিকে প্রতিনিধিত্ব করেন না। কিছু টেলিভিশন আছে, যেগুলোর লক্ষ্য থাকে বিএনপিকে উদ্দেশ্যমূলক সমালোচনা করা। সেসব ক্ষেত্রে আমাদের যারা ওখানে যান, তাদের আরও সতর্ক, আরও গঠনমূলক এবং আরও তথ্যনির্ভর বক্তব্য নিয়েই সেখানে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিশেষ করে নির্বাচনের অনিয়মের নানা তথ্যগুলো সেখানে যেন যথাযথভাবে তুলে ধরা হয়, সেই বিষয়ে নেতাদের গুরুত্ব দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

শামসুজ্জামান দুদু বলছেন, কিছু টেলিভিশন আছে যেগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে বিএনপিকে টার্গেট করে থাকে। এগুলো যারা ফেস করতে পারবেন না, তারা যেন সেসব টেলিভিশনে না যান। যারা পারবেন, তারাই যেন যান। তবে কাউকে কোনো টেলিভিশন বা অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলতে বলা হয়নি।

এই নীতিমালার কমিটিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে আরও রয়েছেন- শামসুজ্জামান দুদু, আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাখাওয়াৎ হোসেন সায়ন্থ এবং রুমিন ফারহানা।

এই কমিটি বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন এবং যারা টকশোতে যাবেন, প্রয়োজনে তাদের পরামর্শ দেবেন।

বৈঠকে অংশ নেয়া দলটির নেতারা জানান, দল থেকে যারা টকশোতে যাবেন, কারা প্রতিনিধিত্ব করবেন, তাদের একটি তালিকা করা হবে। বিএনপির প্রেস কনফারেন্স, বক্তব্য তাদের ইমেইলে নিয়মিত জানিয়ে দেয়া হবে।

আর যারা দলের পদে নেই, তাদের দলীয় পরিচয়ে টকশোতে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হবে।

এসব নীতিমালা দলটির নেতাদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। তবে দলটির পদে নেই, এমন ব্যক্তিরাও চাইলে এই কমিটির সাহায্য নিতে পারবেন।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, নির্বাচনের আগে এবং পরে কয়েকটি টেলিভিশনের আচরণ তাদের কাছে পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে হয়েছে। যেখানে অনুষ্ঠানের সঞ্চালকরাও একটি পক্ষ নিয়ে বিএনপিকে হেনস্তা করার চেষ্টা করেন বলে তাদের অভিযোগ।

তাই টেলিভিশন অনুষ্ঠানগুলোতে দলের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে একটি নীতিমালা তৈরির জন্য উদ্যোগ নিয়েছে দলটি।