নুসরাতের রহস্যজনক মৃত্যু, ইবিতে সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে ফের মানববন্ধন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি নওরীন নুসরাত স্নিগ্ধা’র রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে ফের মানববন্ধন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের “মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব” ম্যুরাল চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় ।

মানববন্ধনে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ এ রহস্যজনক মৃত্যুর বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে ধরেন। এটা হত্যা, আত্মহত্যা নাকি আত্মহত্যার প্ররোচনা সেটা তদন্ত করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।

এসময় আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা নওরীন আপুর খোলা চিঠির মাধ্যমে জানতে পারি, তার শ্বশুর বাড়ির লোকেরা তাকে পড়াশোনা না করে দ্রুত বাচ্চা নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলো। তার পিতা মাতা তার সাথে দেখা করতে চেয়েছিল, কিন্তু তার স্বামী তাদেরকে সন্ধ্যা ৬টার পর আসতে বলেছিল। ঠিক সেই সময়ই তার মৃত্যু হয়। এর মধ্যে আসলে কি রহস্য বিদ্যমান? তা আমরা জানতে চাই। আমরা চাই তার মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক। আমরা আর কোন নওরীনকে হারাতে চাই না।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরামের সভাপতি ও ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক সহকারী মডারেটর ও ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন জাহিদ , আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের সভাপতি ও ডিবেটিং সোসাইটি সহকারী মডারেটর সহকারী অধ্যাপক সাহিদা আখতার, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম শোয়েব ও ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুস সাকিবসহ তার বর্ষের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

শাপলা ফোরামের সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, নওরীনের মৃত্যটি প্রমাণ হওয়ার আগে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানাই যে, তারা একটি চিত্র তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন যে ঘটনাটি আলোর মুখ দেখাবে তদন্তের মাধ্যমে। আমরা এর আগে শুনেছি তার পরিবার বিচারের জন্য অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে, কিন্তু বিচারের কার্যক্রম শুরু করতে পারছিলো না। তবে গতকাল দেখলাম বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছে এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে উপস্থাপনের জন্য নির্দেশ দিয়েছে। আমি বলতে চাচ্ছি না তার স্বামী তাকে হত্যা করেছে, আমি বারবার বলার চেষ্টা করেছি, নুসরাত ছিল একজন প্রতিবাদী মেয়ে, সে প্রগতিশীল সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে দিয়ে ছিলো , আত্মহত্যার একটি প্রতিবাদী চরিত্র। সে কিভাবে আত্মহত্যা করে? আমাদের কথা হচ্ছে, এ ঘটনাটির একটি বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত চিত্রটি ফুটে উঠুক।

শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, নওরীনকে দেখে সবসময় একটা পজিটিভ ধারণা আসতো। নওরীন ছিল বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিল। তিনি সবখানেই তার বহুমুখী প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছে। নওরীন আত্নহত্যা বিরোধী বিভিন্ন সভা-সেমিনার ও পত্রিকায় লেখালেখি করতো। তিনি টিভি বিতার্কিক ছিলেন। নওরীন আত্নহত্যা করবে এটা বিশ্বাসই হয় না। কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে আমরা তার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।