বনানীতে ধর্ষণ মামলা: নাগালের বাইরে আসামিরা
রাজধানী ঢাকার বনানীতে রেইন ট্রি হোটেলের একটি কক্ষে অস্ত্র ঠেকিয়ে দুই তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার পর তিন দিন পার হলেও আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ বলছে, তাদেরকে ধরতে প্রত্যেকের বাসায় অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে তারা বাসায় না থাকায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
মামলার অন্যতম আসামি সাফাত আহমেদের বাবা দিলদার আহমেদ গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, তার ছেলে গুলশান-২ নম্বরের ৬২ নম্বর রোডের ২ নম্বর বাসায়ই রয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাফাত আহমেদের যে অ্যাকাউন্ট রয়েছে সেটি ডিঅ্যাক্টিভ পাওয়া গেলেও বেশিরভাগ সময় তাকে হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবারে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে।
তিনি বলেছেন, সাফাত বাসায় নিয়মিত আসছে। সময় দিচ্ছে, আবার বেরও হচ্ছে। মামলার পর পুলিশ সাফাতের সঙ্গে কথা বলেছে। পুলিশ তদন্ত করছে, যদি সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যাবে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ বনানীর ওই হোটেলে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ নিজের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত করে নিয়ে যান বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এই দুই তরুণীকে। সেখানে অস্ত্রের মুখে তাদের হোটেল কক্ষে আটকে ধর্ষণ করা হয়। ঘটনার ৪০ দিন পর ৬ মে সন্ধ্যায় বনানী থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। তারা হলেন সাদনান সাকিফ, সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও তার দেহরক্ষী (অজ্ঞাত)।
বনানী থানার পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বলেন, ‘আসামিদের ধরতে তাদের বাসায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। কিন্তু তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। তাদেরকে ধরতে সম্ভাব্য সব জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।’
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ঢাকা উত্তর) উপ কমিশনার নাজমুল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে। আসামিরা যত প্রভাবশালীই হোক না কেন, তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। কোনভাবেই কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধ করলে কাউকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশ ছায়া তদন্ত করছে। আসামিরা যাতে পালাতে না পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এদিকে ইমিগ্রেশন পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আসামিরা যেন দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে।
অন্যদিকে দুই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা নেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের সময়ক্ষেপণ ও তদন্তে কচ্ছপগতির কারণ খতিয়ে দেখতে সোমবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন