রহস্যময় ‘লুপাস রোগ’ সম্পর্কে জানাতে হবে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেছেন, লুপাস বা এসএলই রোগ সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে। এ সম্পর্কিত চিকিৎসাসেবা শুধু ঢাকা কেন্দ্রীক নয়, দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে হবে। লুপাস রোগ সম্পর্কে মানুষ খুবই কম জানেন। মানুষকে জানানোর বিষয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লুপাস রোগীদের চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি পুনর্বাসনও জরুরি।
বিশ্ব লুপাস দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিলন হলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউমাটোলজি বিভাগ, লুপাস ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ রিউমাটোলজি সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সচেতনতামূলক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, লুপাস হলো বিশ্বের অন্যতম রহস্যময় ও বিনাসী এক রোগ, যা মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি সাধন করতে পারে। লুপাসের সাধারণ উপসর্গগুলো হলো- চুল পড়া, মাথা ব্যাথা, নাক ও গালের উপর প্রজাপতির পাখার মত লাল চাকা, চরম ক্লান্তি বা অবসাদ, জ্বর, মুখে বা নাকে ঘা, গিরায় ব্যাথা বা ফোলা, অস্বাভাবিক রক্ত জমাট, রক্তশূন্যতা, বুকের বা গভীর নিশ্বাসের সময় ব্যাথা, রোদ বা আলোয় শরীরের চামড়ায় প্রভাব বা জ্বালাপোড়া, ঠান্ডায় আঙুল সাদা বা নীলাভ হয়ে যাওয়া এবং হাত, পা ও চোখের চারপাশে ফোলা ইত্যাদি।
বক্তারা জানান, বিশ্বে ৫০ লাখ লুপাস রোগে আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। এ রোগ প্রতি এক লক্ষে ২০ থেকে ১৫০ জনের হতে পারে। শতকরা ৯০ ভাগ লুপাস রোগী কমবয়সী মহিলা। শতকরা ৬৫ ভাগ রোগীর বয়স ১৬ থেকে ৫৫ এর মধ্যে, শতকরা ২০ ভাগ ১৬ বছরে নিচে এবং শতকরা ১৫ ভাগ ৫৫ বছরের বেশি। ছেলেদের এই রোগের প্রকোপ মেয়েদের চেয়ে অনেক কম।
লুপাস ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এন আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউ ভিসি (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মিনহাজ রহিম চৌধুরী, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুর রহিম, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও লুপাস ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রো-ভিসি (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার তার বক্তব্যে লুপাস রোগীদের হতাশ না হয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপনে থাকার প্রবণতা ধরে রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, লুপাস রোগীদের চিকিৎসা ব্যয় যাতে রোগীদের সামর্থ্যরে মধ্যে থাকে তা বিবেচনায় রাখতে হবে। চিকিৎসকদের ওষুধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। লুপাস রোগীদের দরদ, যত্ন ও ভালোবাসা দিয়ে সেবা দিতে হবে।
উল্লেখ্য, লুপাস একটি সিস্টেমিক রোগ। এই রোগে শরীরের বিভিন্ন সিস্টেম যেমন- চর্ম, স্নায়ুতন্ত্র, রক্ত সঞ্চালন তন্ত্র, কিডনি, মাস্কুলো-স্কেলেটাল সিস্টেম ইত্যাদি আক্রান্ত হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন