পালিয়ে বেড়াচ্ছে দশম শ্রেণির ছাত্রী আইরিন
ঝালকাঠির রাজাপুরের গালুয়া এসকে বালিয়া বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের দশম শ্রেণির ছাত্রী রাবেয়া সুলতানা আইরিন (১৫) বাল্য বিয়ের হাত থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আইরিনের বাবা উপজেলার পুটিয়াখালি গ্রামের মোঃ আলতাফ হোসেন তালুকদার ঢাকার একটি মাদ্রাসার নাইট গার্ড হিসেবে কর্মরত থাকার সুযোগে সোমবার বিকেলে তার তার মা সেলিনা বেগম উপজেলার পুটিয়াখালি গ্রামের সাহেবের হাট এলাকার আব্দুল গফ্ফার মীরের ছেলে বখাটে হালিম হোসেন সাকিব (২৬) এর সাথে বিয়ের অয়োজন করেছে।
বিয়ের পর রাতেই বখাটে সাকিবের সাথে থাকতে হবে এক কক্ষে, এমন ভয়ে সোমবার সকালে বাড়ি থেকে স্কুলে কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে রাজাপুর সাংবাদিক ক্লাবে এসে এসব অভিযোগ করেন স্কুল ছাত্রী রাবেয়া সুলতানা আইরিন। পরে দুপুরে সাংবাদিকদের পরামর্শ অনুযায়ী ওই ছাত্রীকে ইউএনও’র সহযোগীতা কামনা করলে ইউএনও আফরোজা বেগম পারুল আইরিনকে আশ্রয় দেন এবং ছাত্রীর মাসহ স্বজনদের ইউএনও অফিসে ডেকেছেন।
সাংবাদিকদের কাছে স্কুল ছাত্রী রাবেয়া সুলতানা আইরিন অভিযোগ করে জানান, সে পড়ালেখা করে নিজের পায়ে দাড়াতে চায় কিন্তু মা জোড় করে এলাকায় বখাটে হিসেবে চিহ্নিত হালিম হোসেন সাকিবের সাথে বিয়ে দিতে চাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এছাড়া সাকিবের বিভিন্নভাবে হুমকি ও চাপে নিরুপায় হয়ে ১০/১২ দিন আগে হারপিক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছে আইরিন।
বর্তমানে আইরিন নির্ভিগ্নে লেখাপড়া করতে চায়, ওই ছেলের সাথে বিয়ে থেকে যদি নিজেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয় তাহলে আত্মহত্যা ছাড়া অন্যকোন পথ নেই বলেও জানান। দীর্ঘদিন ধরে মায়ের এমন আচরনের কারনে সঠিকভাবে লেখাপড়াও করতে পারছে না মেধাবী ছাত্রী আইরিন। নিজের স্কুল পড়–য়া মেয়েকে বখাটে ছেলের বশে আনতে ওঝাঁর মাধ্যমে তাবিজ কবজও করেছে ওই ছাত্রীর মা, এমনকি ২১দিন বাড়ির বাহিরে যেতেও বাড়ন করেছেন ওঝাঁ।
বখাটে ছেলে সুচোতুর সাকিব ওই ছাত্রীর মাকে ধর্মের মা ডেকে বশ করায় পরিবারের অন্য সদস্যদেরও বিয়েতে রাজি করাতে ওই ছাত্রীর মা উন্মাত হয়ে উঠে পড়ে লেগেছেন বলেও জানান আইরিন। ৮ম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় গ্রাম শিক্ষক হিসেবে সাকিবের কাছে পড়তে ঠিক করে দেয় আইরিনের মা।
পরে সাকিবের আচরন ভাল না লাগায় সাকিবের কাছে পড়া বন্ধ করে আইরিন, এরপর দীর্ঘদিন ধরে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছে সাকিব, বশে আনে ছাত্রীর মাকেও।
গালুয়া এসকে বালিয়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আইরিন মেধাবী ছাত্রী, কিন্তু পরিবারের এসব ঝামেলার কারনে তার পড়ালেখায় বিঘœ ঘটছে। এর আগেও কয়েক মাস আগে একবার বিয়ের আয়োজন করলে ইউএনও সহায়তায় স্থানীয়ভাবে তা বন্ধ করা হয়। হালিম হোসেন সাকিব বিয়ের আয়োজনের কথা অস্বীকার করে জানান, এসব বিয়ে-টিয়ের মধ্য তিনি নেই, মেয়ের মা যাচ্ছে ইউএনও’র কাছে তার সাথে দিয়ে দিন।
ইউএনও খবর দেওয়ার পর ওই ছাত্রীর মা সেলিনা বেগম জানান, বিয়ের আয়োজন নয়, কথাবার্তা হয়েছিলে মাত্র। এখন আর বিয়ে দিবো না, মেয়ে যেখাবে থাকতে চায় রাখবো। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ ব্যাপারে ইউএনও আফরোজা বেগম পারুল জানান, ওই ছাত্রীর অভিভাবকদের খবর দেয়া হয়েছে, আসুক তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন