এরশাদকে ভাতিজা আসিফের ‘চ্যালেঞ্জ’
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ করে নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন তারই ভাতিজা, হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ। তিন মাস আগে আগামী সিটি নির্বাচনে মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে রংপুর সিটি নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করেছিলেন এরশাদ।
বুধবার দুপুরে এরশাদের পৈত্রিক নিবাস রংপুর মহানগরীর সেনপাড়া স্কাইভিও লাঙ্গল ভবনে এক সাংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন আসিফ।
চাচা ভাতিজার এমন পাল্টাপাল্টি ঘোষনা রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। গত সিটি নিবাচনও জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী নিয়ে নাটকীয়তা হয়েছিল।
নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা করা এরশাদকে চ্যালেঞ্জ করা কি না জানতে চাইলে জাপা চেয়ারম্যানের ভাতিজা বলেন, ‘আমি মনোনয়ন ও দলীয় প্রতীক প্রত্যাশা করছি। এটা দ্বন্দ্ব নয়। যেহেতু তিনি রংপুরের মানুষের পালস বুঝতে পারছেন না, তাই সেই পালস বুঝিয়ে দেয়ার জন্যই আমার এই অবস্থান।’
২০১২ সালে রংপুর সিটি নির্বাচনে ভোট হয়। চলতি বছরের শেষ দিকে আবার নির্বাচন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত নির্বাচনে এখান থেকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত শরফুদ্দিন আহমেদ ঝণ্টু নির্বাচিত হন। এবার এখানে নির্বাচন হবে দলীয় প্রতীকে।
এরশাদের ভাতিজা বলেন, জাতীয় পার্টির লাগাম এরশাদের হাতে নেই। এ কারণে নানা অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে দলের মধ্যে। তিনি বলেন, ‘এরশাদ রংপুরের মানুষের পালস বুঝতে পাচ্ছেন না। দলীয় স্বার্থে সাধারণ জনগণের পালস বুঝতে হবে এরশাদকে। তাই আমি এরশাদ পরিবারের সদস্য হিসেবে সাংবাদিক সম্মেলেনর মাধ্যমে মেয়র পদে ইলেকশনের ঘোষণা দিলাম। যদি দলীয় মনোনয়ন নাও পাই তবুও নির্বাচন করব।’
সাবেক সংসদ সদস্য আসিফ রংপুর জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে থাকা নেতা মসিউর রহমান রাঙ্গার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে এরশাদকে যখন সিএমএইচে নেয়া হয়, তখন তার মুক্তির দাবিতে তিনি রংপুরে মিছিল বের করেন। এ সময় মিছিলে রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও বেপরোয়া লাঠিপেটা করা হয়। রাঙ্গা এই আক্রমণে ইন্ধন জুগিয়েছিলেন।
এরশাদের ভাতিজা বলেন, ‘তখন উল্টো আমাদের নামে বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়। সেই থেকে দলীয় নেতাকর্মী ও রংপুরবাসীর নিকট রাঙ্গার মুখোশ উম্মোচিত হয়েছে। তিনি জাতীয় পার্টতে সুযোগসন্ধানী।’
এরশাদের ভাতিজা বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা ও দলীয় ষড়যন্ত্রকারী মসিউর রহমান রাঙ্গার মধ্যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছে। যা দেখে রংপুরের হাজার হাজার জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ হতাশ এবং পার্টির চেয়ারম্যানের সাথে রাঙ্গার পুনরায় সখ্যতা ও জনমনে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।’
আসিফ বলেন, যার জন্য হাজার হাজার নেতাকর্মী লাঞ্ছিত হলো-পুনরায় তার সাথে পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের সখ্য রংপুরের মাটিতে এরশাদ পরিবারের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন করছে। এই অবস্থায় মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিলে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে হারবে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।
এরশাদের ভাজিতা বলেন, ‘২০১২ সালের মেয়র নির্বাচনে দলীয় চেয়ারম্যান প্রথমে রাঙ্গাকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তখন জনগণ তার ঘোষণার বিপরীতে দাড়িয়েছিল। তিনি তখন বিভ্রান্ত ছিলেন। তাই কখনও মানিক ও কখনও মোস্তফার পক্ষে বিপক্ষে গেছেন। সেই সময়ও যদি এরশাদ মানিককে মনোনয়ন দিতেন তাহলেও ভদ্র মানুষ হিসেবে রংপুরের মানুষ তাকে গ্রহণ করতো। সেই সময় এরশাদ বিভ্রান্ত থাকার কারণে মেয়র পদটি আমরা হারিয়েছি। এবার হারাতে চাই না।’
জাতীয় পার্টর নেতা আবুল কালাম, গোলাম মোস্তফা বাটুয়া, রতন মিয়া, রকিবুল হাসান সুজন, মামুনুর রশিদ ফুলু, আব্দুর রাজ্জাক, আসাদুল আলম, দেবাষীস সরকার প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন