‘বিদ্যুতের প্রকৌশলী মনে হয় হিন্দু, না হলে কারেন্ট নিবে কেন?’

‘আমরা কি দোষ করছি, বিদ্যুতের আর.ই (রিটেইনার ইঞ্জিনিয়ার) মনে হয় হিন্দু, জামালগঞ্জের অফিসে মনে হয় হিন্দু আছে, হিন্দু না হলে কারেন্ট নিবে কেন?’

নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হলেও উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় এভাবেই সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল আলম ঝুনু মিয়া।

বুধবার (১৪ জুন) দুপুরে উপজেলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় এসব মন্তব্য করেন তিনি।

অবশ্য সভায় উপস্থিত উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজা আক্তার দিপু ও ফেনারবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু তালুকদার তাৎক্ষণিক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন।

এছাড়াও তার এ বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রসূন কুমার চক্রবর্তীসহ আরো অনেকেই।

অন্যান্য দায়িত্বশীলদের প্রতিবাদের পরও নিজ বক্তব্যে অটল ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল আলম ঝুনু মিয়া। তিনি ওই বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেননি বা বক্তব্য প্রত্যাহারও করেননি।

সভায় প্রতিবাদে ঝড় উঠলে নামাজের কথা বলে সভা ত্যাগ করে চলে যান তিনি, পরে আর সভায় আসেননি। এক পর্যায়ে তাকে ছাড়াই সভা শেষ হয়।

উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজা আক্তার দিপু বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান নিজেই সভায় বিদ্যুৎ প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন।

এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আমরা কি দোষ করছি, ইফতার, সেহেরী ও মাগরিবের নামাজের সময় কারেন্ট থাকে না। বিদ্যুতের আর.ই মনে হয় হিন্দু, জামালগঞ্জ অফিসে মনে হয় কোন হিন্দু আছে, হিন্দু না হলে কারেন্ট নিবে কেন।’

হাফিজা আক্তার দিপু বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের সাম্প্রদায়িক এই মন্তব্যের পরপরই আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। সভায় প্রতিবাদে ঝড় উঠলে চেয়ারম্যান সাহেব নামাজের কথা বলে সভায় ত্যাগ করে চলে যান।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রসূন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘বিদ্যুৎ নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের এভাবে কথা বলা মোটেও উচিত হয়নি বা কাম্য নয়। সভায় উপস্থিত অনেকেই তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেছেন ও বক্তব্য প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছেন। তবে তিনি ওই বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেননি বা বক্তব্য প্রত্যাহারও করেননি।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল আলম ঝুনু মিয়া বলেন, ‘বিদ্যুতের আর.ই হিন্দু- আমি এ ধরনের কোন কথা বলিনি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কি মিথ্যা বলছেন জানতে চাইলে বলেন,‘ এই বিষয়টি বাদ দেন তো।’