চালের দাম নিয়ে কাটছে না হতাশা, আমদানির পরামর্শ
বিগত এক বছরে বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ১৫ টাকার বেশি বেড়েছে। সব ধরনের সরু চালের দামও বেশ বাড়তি। তাই বাজারে চাল কিনতে এসে হতাশ সাধারণ মানুষ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্যাসহ নানা কারণে এ বছর ধান উৎপাদনে যে ঘাটতি হয়েছে, বাজারে তারই প্রভাব পড়ছে। এ অবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে দ্রুত চাল আমদানির পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে সরু চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৫৮ টাকায়। গত বছর এমন সময়ে যে চালের কেজি বিক্রি হয়েছে ৪৪ থেকে ৫০ টাকায়। তবে বাজারে এখন প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৬ থেকে ৪৮ টাকায়। আর গত এক বছরে এ চালের দাম বেড়েছে ৪৭ শতাংশ।
চালসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া বাজার করতে এসে হিসাব মিলছে না রাজধানীর বাসিন্দা আবু তৈয়বের। বিশেষ করে চালের ধারাবাহিক মূল্যবৃদ্ধি অবসরপ্রাপ্ত এই ব্যাংক কর্মকর্তার জন্য এখন দুশ্চিন্তার কারণ।
আবু তৈয়ব বলেন, ‘মিনিকেট বলেন, মোটা চাল সবগুলোতে দাম বেড়েছে। মানুষের বাজেটে তো ঘাটতি হবে। কারণ, যে পরিমাণ দাম বাড়ছে পয়সা তো ওই পরিমাণে বাড়ে নাই।’
ধানের বাড়তি দামের কারণে মিলমালিকরাই চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে দাবি করছেন চালের আড়তদাররা।
রাজধানীর বাবুবাজার চাল আড়ত ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার চৈত্র মাসে যে বাজারটা উইঠা গেছিল ওই বাজারটাই এখনো আছে। ওই বাজারটা আর কমে নাই। মিল মালিকরা বলতেছে, তারা তাদের চাহিদামতো ধান পাচ্ছে না। ধানের দাম বেশি, এই কারণে আরকি চাউলের দাম বেশি।’
তবে কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, হাওর ও বিলে আগাম বন্যা, অধিক বৃষ্টিপাত ও ব্লাস্ট রোগের কারণে এ বছর ধানের উৎপাদন কমেছে। যার প্রভাব এখন বাজারে পড়ছে।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাদের উৎপাদন কমেছে, সরকারের যে মজুদ থাকা দরকার সেটাও দারুণভাবে কমে গেছে। এই দুটো কারণে আমাদের বাজারে চালের সরবরাহ কমে গেছে, তার জন্য চালের দামটা বেড়ে গেছে।’
সম্প্রতি জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা প্রকাশিত ‘ফুড আউটলুক’ প্রতিবেদনে দেওয়া তথ্যমতে, এ বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন ও চীনে চালের উৎপাদন কম হওয়ায় বিশ্ববাজারে চালের এই মূল্যবৃদ্ধি। বাংলাদেশ সরকার এখন ভিয়েতনাম, ভারত ও থাইল্যান্ড থেকে চাল আমদানির চেষ্টা করছে। আর এই বাজারগুলোর চালের দামও এখন বাড়তি।
এ বিষয়ে ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এখন যদি আমরা চালের দামটাকে নিম্নমুখী করতে চাই, তাহলে বাইরে থেকে চাল আমদানি করতে হবে। প্রাইভেট সেক্টরকেও চাল আমদানিতে সহায়তা দেওয়া যেতে পারে। তবে সবচেয়ে ভালো হবে গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট যদি আমরা চাল আমদানি করতে পারি। তাহলে এটা সবচেয়ে ভালো হবে।’
এ ক্ষেত্রে বেসরকারিভাবে চাল আমদানির ওপর বিদ্যমান শুল্ক, সাময়িকভাবে কমানোর পরামর্শ এই বিশেষজ্ঞের।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন