১২শ কর্মীর জুনের বেতন দেয়নি বিমান
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স’ নিয়মিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জুন মাসের বেতন ও ঈদের বোনাসের অর্থ পরিশোধ করেছে গত সপ্তাহেই। অথচ চুক্তিভিত্তিক এক হাজার ২০০ শ্রমিক-কর্মচারী জুন মাসের বেতন পায়নি। এ কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিমানের ক্যাজুয়াল (দৈনিক মজুরির ভিত্তিক) এসব শ্রমিক-কর্মচারীরা।
শ্রমিক-কর্মচারীদের অভিযোগ, বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এই মুহূর্তে দেশে নেই। আর দায়িত্বে থাকা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে এবার ঈদে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এক হাজার ২০০ ক্যাজুয়াল শ্রমিক-কর্মচারী। তবে প্রত্যেককে দুই হাজার ৮০০ টাকা ঈদের বোনাস দিয়েছে বিমান। ক্যাজুয়াল শ্রমিক-কর্মচারীরা বিমানে বাড়তি সুযোগ সুবিধাও পান না। শুধু দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন। গত বছরও ঈদে বিমানের ক্যাজুয়াল শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দিতে চায়নি বিমান প্রশাসন। পরে সিবিএ নেতাদের কঠোর অবস্থানের মুখে বেতন দিতে বাধ্য হয়।
জসিম উদ্দিন নামের বিমানের এক কর্মচারী বলেন, ‘যাদের সিদ্ধান্তে এটা হলো— সেই ব্যক্তিদের বেতন-বোনাস ঈদের সাত দিন আগেই ব্যাংকে চলে গেছে। যাদের ঘামে চলে বিমান, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঈদ-পুজায় ও ছুটির দিনে যারা কাজ করেন, তাদের বেতন হয়না। কর্তারা কী শ্রমিকদের মানুষ না যন্ত্র মনে করেন?’
এ প্রসঙ্গে বিমান শ্রমিক লীগ সভাপতি মো. মশিকুর রহমান বলেন, ‘ক্যাজুয়াল ভিত্তিকে কাজ করা এসব শ্রমিকের দৈনিক বেতন মাত্র ৫০০ টাকা। কর্তৃপক্ষ যদি জুন মাসের ১০ দিনেরও বেতন পরিশোধ দিতো তাহলে এক হাজার ২০০ কর্মীর জন্য প্রয়োজন ৬০ লাখ টাকা। যা রাষ্ট্রয়াত্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য খুব বেশি বোঝা হওয়ার কথা নয়। কারণ বিমান এখন প্রতি বছর লাভ করছে। ক্যাজুয়াল ভিত্তিতে যারা কাজ করছেন তারা আর্থিকভাবে খুব একটা সচ্ছলও নন। সে কারণে মানবিক দিক বিবেচনা করে হলেও তাদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা প্রয়োজন।’
কর্মচারীদের পক্ষ থেকে বৈষম্যের শিকার এসব ক্যাজুয়াল কর্মীদের জুন মাসের ২০ দিনের বেতন অবিলম্বে পরিশোধের জন্য বিমান প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান সিবিএন নেতা মো. মশিকুর রহমান। তিনি বলেন, দেশের গার্মেন্টস শিল্পসহ সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ২০ দিনের বেতন দেওয়া হয়েছে। অথচ বিমান কর্মচারীদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করে যাচ্ছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে মো. মশিকুর রহমান আরও বলেন, বিমানকে জরুরি সার্ভিস ঘোষণা করার পরেও তার প্রথম ফলাফল পেলেন হতভাগা এক হাজার ২০০ ক্যাজুয়াল শ্রমিক-কর্মচারী। তারা এবার ঈদের আগে জুন মাসের বেতন পাবেন না। যদিও বিমানমন্ত্রী সংসদের চলতি অধিবেশনে জানিয়েছেন, গত দুই বছরে বিমানের লাভ ৬০০ কোটি টাকা। সরকারের রাজস্ব তহবিলে প্রতিষ্ঠানটি জমা দিয়েছে ৩০০ কোটি টাকা। কিন্তু তবুও এসব কর্মীদের ঈদের আগে বেতন দেওয়া হলো না।’
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। অন্যদিকে, একাধিকবার চেষ্টা করেও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (প্রশাসন) মমিনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন