একদিনে সড়কে ঝরলো ১৭ প্রাণ, দু’পরিবারেই ৮ জন
ঈদের ছুটি শেষে প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনায় কোনো না কোনো অঞ্চলে সাধারণ মানুষের প্রাণ ঝরছে। বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জেলায় কমপক্ষে ১৭ জনের প্রাণ ঝরলো। নিহতদের মধ্যে গোপালগঞ্জে ৬, সিরাজগঞ্জে ৫, টাঙ্গাইলে ২, রাজশাহীতে ২ ও পাবনায় ২ জন। এদের মধ্যে দুই পরিবারেরই রয়েছেন ৮ জন। এছাড়া এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন।
গোপালগঞ্জ: কাশিয়ানীতে বাস-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের পাঁচজন, অন্যজন চালক। এ ঘটনায় আরও ১০ জন আহত হয়েছেন। সকাল পৌনে ১০টার দিকে কাশিয়ানী উপজেলার মাঝিগাতী নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- হালিম আকন্দ (৫০), তার স্ত্রী আসমা ওরফে পানু বেগম (৪০), ছেলে সুজন আকন্দ (১৮), সিহাব আকন্দ (৬) ও শ্যালক বাদল হাওলাদার (৪৫) ও চালক (অজ্ঞাত)। নিহতদের বাড়ি বাগেরহাট জেলার শরনখোলা উপজেলার খুররিয়াখালী গ্রামে।
স্থানীয়রা জানান, সেবা গ্রীনলাইনের একটি যাত্রীবাহী বাস মাঝিগাতী পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা খুলনাগামী মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৬ জন নিহত হন। এ সময় আহত হয়েছে কমপক্ষে ১০ জন। তবে বাসটি রাস্তার পাশের খাদে পানির নিচে ডুবে যাওয়ায় নিহতের সংখ্যা সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।
সিরাজগঞ্জ: ভোরে জেলার হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের সলঙ্গার রয়হাটিতে বাস-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজনসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন। এছাড়া সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় হরিণচড়ায় বাসচাপায় অরও এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- বগুড়া জেলার কাহালু থানার ধামগাড়া গ্রামের মৃত কিয়ামত উল্লাহ মণ্ডলের ছেলে সোলেমান হোসেন (৬৫), তার পুত্রবধূ লিলি আকতার (৩৫) ও তার ছেলে সাগর হোসেন (১২)।
আহতদের মধ্যে দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- হারুনর রশীদের ছেলে সবুজ (১৮) ও ইমার উদ্দিনের ছেলে মনসুর রহমান (৩০)। এরা দুইজন চাচাতো ভাই।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরছেন হারুনর রশীদ। প্রবাসী স্বামীকে আনতেই বগুড়ার কাহালু থেকে মাইক্রোবাসযোগে তার স্ত্রী লিলি আখতার, তার দুই সন্তান ও শ্বশুড় সোলেমানকে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলেন।
ভোরে মাইক্রোটি হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের সলঙ্গার রয়হাটি এলাকায় পৌঁছলে বিপরীত থেকে আসা যাত্রীবাহী একটি বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ বাঁধে। এতে ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের তিনজনসহ চারজন নিহত হয়।
এ ঘটনায় অন্তত ৫জন আহত হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
তিনি আরও জানান, নিহতদের মৃতদেহ ও দুর্ঘটনা কবলিত বাস-মাইক্রোবাসটি আটক করে হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানায় রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে বেলা ১২টার দিকে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় হরিণচড়ায় বাসচাপায় আকতার হোসেন (৫৫) নামে এক পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত আকতার হোসেন সলঙ্গা থানার দক্ষিণ পুস্তিগাছা গ্রামের বাসিন্দা।
টাঙ্গাইল: সকালে ধনবাড়ীর পাঠানবাড়িতে মাইক্রোবাসের চাপায় দুইজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- ধনবাড়ী উপজেলার নিজবর্ণী এলাকার বাবুল বকুলের স্ত্রী রেবা বগম (৩২) এবং বেলুটিয়া এলাকার আব্দুল মজিদের স্ত্রী সাহাতন (৫০)।
রাজশাহী: দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পুঠিয়ায় উপজেলার পোল্লাপুকুর মোড়ে ট্রাকচাপায় চাচা-ভাতিজার মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- রাজশাহী নগরীর রামচন্দ্রপুর মহল্লার মৃত আবদুল লতিফের ছেলে তুষার হোসেন (২২) ও তার ভাতিজা শাহিন আলী (২০)।
পবা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট মনিরুল ইসলাম জানান, চাচা-ভাতিজা মোটরসাইকেলে চড়ে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক দিয়ে নাটোরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে পোল্লাপুকুর মোড়ে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়।
পাবনা: ঈশ্বরদীর মুলাডুলি ইউনিয়নের চকছিরামপুর গ্রামের কাছে ট্রাকচাপায় ২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- আশরাফুল (২৫) ও শিপন (২৩)।
দুপুরে মটরসাইকেলযোগে তারা মুলাডুলি থেকে দাশুড়িয়ার দিকে যাওয়ার পথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগামী ট্রাক ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আশরাফুল ও শিপন নিহত হন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন