ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে কবরে শুয়ে বাবা চেনাচ্ছেন শেষ ঠিকানা!
বাবা-মায়ের কাছে সন্তানের মৃত্যুর থেকে মর্মান্তিক আর কী-ই বা হতে পারে! সন্তান একটু একটু করে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছে, এটা চাক্ষুস করার যন্ত্রণা বলে বোঝানো কঠিন। কৃষক এক বাবাও জেনেছেন এই কঠিন সত্যিটা। খবর ইন্ডিয়া টাইমসের।
জেনেছেন, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত তার ২ বছরের মেয়েটা আর বেশিদিন তাদের কাছে নেই। সন্তানকে বাঁচানোর আর কোনও আশা নেই বুঝতে পেরে, তিনি মেয়ের জন্য আরামে শেষনিদ্রার ব্যবস্থা করেছেন। মেয়ের জন্য আগাম কবর খুঁড়ে সেখানে তাকে নিয়ে গিয়ে খেলাধুলা করেন। যাতে মৃত্যুর পর এই জায়গাটা তার কাছে অপরিচিত না লাগে।
মর্মান্তিক এই ঘটনা চিনের। শুনলে ডুকরে কেঁদে ওঠে মন। সিচুয়ান প্রদেশের বাসিন্দা পেশায় কৃষক ঝাং লিয়ং-এর ২ বছরের মেয়ে ঝাং জিনলেই ২ মাস বয়স থেকে দূরারোগ্য থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। এখনও পর্যন্ত তার চিকিত্সায় খরচ হয়ে গিয়েছে ১০ লক্ষ টাকা।
নিঃস্ব বাবার এখন মেয়ের মৃত্যুর অপেক্ষা করা ছাড়া আর উপায় নেই। ঝাং বলছেন, ‘আমরা অনেকের থেকে টাকা ধার করেছি। আর কেউ আমাদের টাকা ধার দিতে রাজি নয়। তাই মেয়েকে এখানে নিয়ে এসে খেলাধুলো করার ভাবনাটা আমার মাথায় আসে। এখানেই ও শান্তিতে নিদ্রা যাবে।’
ছোট্ট মেয়েটির বাবা-মা এক সময় ভেবেছিলেন, আর একটি বাচ্চা নেবেন। সদ্যোজাতের আম্বিলিকাল কর্ডের রক্ত দিয়ে সারিয়ে তুলবেন প্রথম সন্তানকে। কিছুদিনের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বাও হয়ে পড়েন ঝাং-এর স্ত্রী।
তবে কিছুদিনের মধ্যেই তারা বুঝতে পারেন, রক্ত প্রতিস্থাপনে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তা জোগার করা তাদের পক্ষে অসম্ভব। এরপর আর কোনও আশা জোর করে মনের মধ্যে জিইয়ে রাখেননি এই দুঃস্থ বাবা-মা। মেয়ের পরকালটাকে সুরক্ষিত করার চেষ্টায় লেগে পড়েন তারা।
মৃত্যুর পর ওই কবরে একা একা শুয়ে থাকতে যাতে ভয় না করে, সে জন্য আগেভাগেই ওই জায়গাটার সঙ্গে পরিচিত করাচ্ছেন ছোট্ট মেয়েকে। সেখানে এখন থেকে খেলাধুলো করলে ওই শিশু মৃত্যুর পরও বাড়িতেই আছে বলে মনে করবে, এই ভাবনাই ঝাং ও তার স্ত্রীর যন্ত্রণায় মলম দিচ্ছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন