সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় জ্বলছে পশ্চিমবঙ্গ
নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে ফেসবুকে অবমাননাকর পোস্টের অভিযোগে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় জ্বলছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া দাঙ্গা এখনও অব্যাহত আছে। দাঙ্গা শুরুর এক সপ্তাহ পর রোববারও রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। দার্জিলিংয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে পুলিশি চেকপোস্ট। ভাঙচুর চালানো হয়েছে পঞ্চায়েত অফিসে।
দেশটির প্রভাবশালী দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে বলছে, পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে পুলিশের গুলিতে এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর পর রোববার সেখানে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগ করেছে গোর্খাল্যান্ডপন্থী আন্দোলনকারীরা।
রাজ্যপুলিশ বলছে, রোববার দার্জিলিংয়ের কুর্সিওং এলাকায় পুলিশের উপ-বিভাগীয় অফিসে আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। অগ্নিকাণ্ডে ভবন আংশিক পুড়ে গেছে। দার্জিলিংয়ের পোখ্রিবিং পঞ্চায়েত অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছে গোর্খাল্যান্ডপন্থীরা। এছাড়া দার্জিলিংয়ের পোখারি এলাকায় পুলিশের একটি চেকপোস্ট গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
এর আগে শনিবার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থকরা ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পাহাড়ে পুলিশের একটি চেকপোস্ট ও সরকারি অফিসে হামলায় চালায়। আন্দোলনকারীদের একজনকে পুলিশ গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ এনেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।
পুলিশ এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেও পাহাড়ের প্রসিদ্ধ দুটি রাজনৈতিক দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট দাবি করে বলছে, পুলিশের গুলিতে নিহত তাশি ভুটিয়া তাদের দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এ ঘটনার পর দার্জিলিংয়ের সোনাদা পুলিশ স্টেশনে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে গত মাস থেকেই ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। ওই সময় গোর্খাল্যান্ড নামে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে স্থানীয়রা। পৃথক রাজ্যের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।
উল্লেখ্য, গত সোমবার পশ্চিমবঙ্গের বশিরহাটে এক যুবক ফেসবুকে হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে আপত্তিকর একটি পোস্ট দেয়ার পর সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। কলকাতা শহর থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে বশিরহাটে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় আহত ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। দাঙ্গায় আহতদেরকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি নেতা এমএস লকেট চ্যাটার্জি ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকদের ধাওয়ার শিকার হয়েছিলেন।
এর পর থেকেই দফায় দফায় রাজ্যের বাদুরিয়া, বশিরহাট, হাওড়া, স্বরূপনগর ও দেগঙ্গায় লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু সড়ক অবরোধ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ মোতায়েন করা হয়। রাজ্যের শান্তি ফিরিয়ে আনতে অতিরিক্ত ৪০০ বিএসএফ সদস্য মোতায়েন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন