এক লাইসেন্সের বিপরীতে একাধিক ফেব্রিকেটেড আর্মস!
এক লাইসেন্সের বিপরীতে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের জন্যই আনা হচ্ছে পুরাতন ও ফেব্রিকেটেড আর্মস। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের চালান থেকে ১৯টি পুরাতন ও ফেব্রিকেটেড আর্মস জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর (সিআইআইডি)।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বিমানবন্দরের ফ্রেইট ইউনিট থেকে পিস্তলগুলো জব্দ করা হয়। অস্ত্রগুলো পরীক্ষার সময় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে রোববার (৯ জুলাই) একই ধরনের দুটি পিস্তল জব্দ করা হয়।
বিমানবন্দরে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় তিন সদসরে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে সিআইআইডি’র অতিরিক্ত মহাপরিচালক একেএম নুরুল হুদা আজাদকে।
সিআইআইডি বলছে, উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো বায়তুল মোকারম মার্কেটের দোতলায় ৬৫ নম্বরের মেসার্স ইমরান আর্মস অ্যান্ড কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠান আমদানি করেছে। গত ৯ জুলাই একই প্রতিষ্ঠানের দুটি পিস্তলও জব্দ করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। এ নিয়ে ইমরান আর্মস অ্যান্ড কোম্পানির ২১টি অস্ত্র জব্দ করা হলো। এগুলোর মধ্যে ওয়ালথার পিপি ১৬টি ও পাঁচটি এইচকে ফোর ব্র্যান্ডের।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের (সিআইআইডি) মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, এক চালানে ইতালি থেকে ৫৮টি অস্ত্র নিয়ে আসে মেসার্স ইমরান আর্মস এন্ড কোম্পানি। আমদানি নীতি আদেশ অনুযায়ী, পুরানো ও অকার্যকর অস্ত্র আনার ওপরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
অস্ত্রগুলো পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ১৯টি অস্ত্র পুরানো ও ফেব্রিকেটেড। অস্ত্রগুলো আমদানি কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। তবে বাকি ৩৭টি অস্ত্রের বৈধ কাগজ পাওয়া গেছে। তিনি জানান, এসব অস্ত্রের অধিকাংশের বডির বিভিন্ন অংশের গায়ে খোদাই করা মুদ্রিত ইউনিক নম্বরও আলাদা। পুরাতন অস্ত্র আমদানির কারণ কী তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে মেসার্স ইমরান আর্মস অ্যান্ড কোম্পানির সত্বাধিকারী নূরউদ্দীন ইমরান বলেন, প্রায় দুই বছর আগে এই আগ্নেয়াস্ত্রের অর্ডার দেয়া হয়েছিল সংশ্লিষ্ট ইটালির আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির প্রতিষ্ঠানের কাছে।
আমদানি নীতি অনুসরণ ও সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে আগ্নেয়াস্ত্রগুলো দেশে আনা হয়। আগ্নেয়াস্ত্রগুলোর প্রতিটির বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্রের গায়ে একাধিক সিরিয়াল নম্বরের সঙ্গে কাগজপত্রে উল্লেখ করা সিরিয়াল নম্বরের মিল রয়েছে।
অপর একটি সূত্র জানায়, দেশে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের বিপরীতে এসব আগ্নেয়াস্ত্র আনা হচ্ছিল। বিমানবন্দরে আটক হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের গায়ে উল্লেখ করা একই সিরিয়াল নম্বরে আগ্নেয়াস্ত্র আগেই আমদানি করে দেশে লাইসেন্সধারী ব্যক্তিরা ব্যবহার করছেন।
অস্ত্র ব্যবহারকারীরা তাদের লাইসেন্সের বিপরীতে একই সিরিয়াল নম্বরের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের জন্য এসব পুরাতন ও ফেব্রিকেটেড আমর্সের চালান দেশে আনা হয়।
প্রসঙ্গত, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কাস্টমস নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে ৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ‘অপারেশন আইরিন-২’-এর অংশ হিসাবে এই অভিযান পরিচালিত হয়। এই অভিযান ৪ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।
বাংলাদেশসহ এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ২২টি দেশ অভিযানে অংশ নিচ্ছে। শুল্ক গোয়েন্দারা এই অভিযানের লিয়াজোঁ অফিস হিসেবে কাজ করছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন