দিনে জলজটে নাকাল : রাতেও দুর্ভোগের কমতি নেই
দিনে জলজটে নাকাল রাজধানী ঢাকার জনসাধারণ রাতেও কঠিন বাড়ি ফেরার সংগ্রামের মুখোমুখি। শাহবাগ, ফার্মগেট, মহাখালী, নাবিস্কো, সাতরাস্তাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সেই সংগ্রামের চিত্র। অফিস শেষে বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় নগরীর বিভিন্ন স্থানে অপেক্ষা করছেন হাজারো মানুষ। কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও গাড়িতে উঠতে পারেননি কেউ কেউ। সকালের টানা বর্ষণে জলজটের সঙ্গে যুদ্ধকরা নগরবাসীর জন্য এ এক কঠিন সংগ্রামেরই বটে।
বুধবার সকালের বৃষ্টির পানি রাস্তা থেকে অনেকটাই নেমে গেলেও রাস্তা গণপরিবহন নেই কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ। গণপরিহনের ড্রাইভার-কন্ট্রাকটারদেরকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলেন: সাকালে রাস্তায় অনেক পানি ছিল। তাই যারা সকালে গাড়ি বের করেছেন, তাদের অনেকের গাড়ির ইঞ্জিনে পানি ঢুকে বিকল হয়ে গেছে। যার কারণে বিকালে অধিকাংশ ড্রাইভারই গাড়ি বের করতে পারেননি। মূলত এ কারণেই নগরী জুড়ে পরিবহণ সংকট।
ফার্মগেট আনন্দ সিনেমা হলের সামনে অপেক্ষা করছিলেন ইয়াসমিন আরা। কাজ করেন একটি আইটি সেবাদানকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে। তার সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের।
তিনি জানান: নিকুঞ্জ থেকে সপ্তাহে ছয়দিন তিনি কলাবাগানে অফিস করতে আসেন। সকালে বৃষ্টি উপেক্ষা করে অনেক কষ্টে এসেছেন। কলবাগানে অনেক্ষণ দাড়িয়ে থেকেও গাড়ি পাননি। শেষ মেষ রিক্সা নিয়ে ফার্মগেট এসেছেন। কিন্তু তাতেও সমাধান মিলছে না। জানেন না কখন গাড়িতে উঠতে পারবেন! আবার পরলেও কতোক্ষণে বাড়ির দুয়ারে পৌঁছাতে পারবেন!
কথা হচ্ছিল বিআরটিসি পরিবহণের ড্রাইভার নূর আলীর সঙ্গে। গণপরিবহণ কম থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলে: আমাগো আর কি করবার আছে কন। খানিক বৃষ্টি হলিই রাস্তা পানিতে ডাবুর ডুবুর করে। গাড়ি নামাইলেই তো ইঞ্জিন বইয়া যায়। বিয়ানে যারা গাড়ি নামাইছিলো হেগো গাড়ি এহন গ্যারেজে। আমি তো হবাই নামাইলায়। কি জানি কতক্ষোেণ চালাইবার পারমু।
গাড়ি না পেয়ে হেটে যাওয়ারও উপায় নেই নগরবাসীর। একদিকে যানজট, অন্যদিকে সিটি কর্পোরেশনের খুঁড়ে রাখা রাস্তা। রাস্তায় পা রাখলেই অপেক্ষা করছে জলকেলির সঙ্গে ফ্রি হিসেবে কাদাকেলি। যদিও ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উত্তরের মেয়র আনিসুল হকের দাবি করছেন: মেয়ররা জাদুকর নয়! চাইলেই ঢাকা শহরের পানি কমিয়ে ফেলতে পারবেন না। এর জন্য তিনি ওয়াসার সঙ্গে সিটি কর্পোরেশনের সমন্নয়হীনতার কথা তুলে ধরেছেন।
তবে, দিন শেষে আশারবানী শুনিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।তিনি বলেছেন: এবছর যায় হোক, প্রমিজ করছি আগমী বছর পানি থাকবে না।
জনসাধারণের অভিযোগ: হাজারো প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা দুয়ারে দুয়ারে ঘুরলেও, ভোটের বৈতরণী পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাজারো তো দূরে থাক নূন্যতম সেবা কার্যক্রমেও তাদের মন থাকে না। সাধারণের দেওয়া ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন নিজ ভাগ্য উন্নয়নে। আর সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের পর বছর জিম্মি করে এ সাধারণদেরই।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন