হতে চেয়েছিলেন ডাক্তার, হলেন জঙ্গি!
গুলশান হামলার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’দের অন্যতম আসলাম হোসাইন ওরফে মোহন ওরফে রাশেদুল ইসলাম রাশেদ ওরফে র্যাশ। মাগুরা থেকে গ্রেফতার হয়েছেন। প্রায় দেড় বছর ধরে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।
গত বছরের ১১ রমজান (জুন মাস) তিনি নিখোঁজ হন। চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছা নিয়ে রাজশাহী শহরে লেখাপড়া করতে যাওয়া জঙ্গি আসলাম শুক্রবার ভোরে নাটোরের সিংড়া থেকে গ্রেপ্তার হয়। তার বাবা আব্দুস সালামও নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় তিন বছর ধরে বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী নাসিমা বেগম।
আব্দুস সালামের বাড়ি নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে। পেশায় ঠিকাদার আব্দুস সালামের এক ছেলে এক মেয়ের মধ্যে আসলাম হোসাইন ছোট। ৭/৮ বছর আগে আব্দুস সালাম পরিবারসহ পবা উপজেলার বড়গাছি ইউনিয়নের মথুরা নওদাপাড়া গ্রামে শশুরবাড়ি সেকেন্দার আলীর বাড়িতে চলে আসেন।
তিন বছর আগে নওগাঁর আদালতে সাড়ে তিন লাখ টাকার একটি চেক জালিয়াতির মামলায় সালামের এক বছর সাজা হয়। এর পর থেকে সে নিখোঁজ রয়েছে। তার সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের কারো যোগাযোগ নেই বলে জানান সালামের স্ত্রী নাসিমা বেগম।
তিনি বলেন, আসলাম কাঞ্চনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে নানার বাড়িতে চলে আসে। নওহাটা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। এর পর সে রাজশাহী শহরের একটি বে-সরকারি প্যারামেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়।
পরে আসলাম ভর্তি হন রাজশাহী মডেল স্কুল এন্ড কলেজে। গত বছর তার এইচএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু আসলাম এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল কিনা তা বলতে পারেননি তার মা নাসিমা বেগম।
তিনি বলেন, আসলাম নগরীর একটি ছাত্রবাসে থাকতে। গত বছর রোজার শুরুতেই আসলামকে নগরের লক্ষ্মীপুর ভাটাপাড়া কাদের মন্ডলের মোড়ে তার খালার বাসায় রেখে আসা হয়। সেখান থেকে গত বছরের ১১ রমজান আসলাম নিখোঁজ হন। এর পর তার সঙ্গে আমাদের আর যোগাযোগ হয়নি। আসলাম একদিন ফিরে আসনে এ আশায় ছিলাম। তাই থানায় জিডি করা হয়নি বলে জানান নাসিমা বেগম।
নাম না জানিয়ে তার এক খালা বলেন, আসলাম মাঝে মধ্যেই বাড়িতে আসতো। সবাইকে নামাজ পড়ার কথা বলতো। কেউ নামাজ না পড়লে তার উপর রাগারাগি করতো। তিনি আরো বলেন, আসলাম চিকিৎসক হতে চেয়েছিল।
সে বলতো খালা আমি একদিন ডাক্তার হয়ে এসে তোমাদের চিকিৎসা করবো। চিকিৎসার জন্য তোমাদের কারো কাছে যেতে হবে না। এই ছেলে যে জঙ্গি হয়ে যেতে পারে তা আমরা বিশ্বাস করতে পারছি না।
আসলামের চাচাতো মামা মোহাম্মাদ সেন্টু বলেন, রাজশাহী শহরে ভর্তি হয়ে ছাত্রাবাসে থাকতো আসলাম। সেখান থেকে সে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে পরিবারের সদস্যরা আসলামকে তার খালার বাসায় রেখে আসা হয়। কিন্তু সেখানে রেখেও তাকে রক্ষা করা যায়নি। কয়েকদিন পর সে খালার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন