বিমানের জানালায় ছোট্ট একটা ছিদ্র থাকে কেন?

বিমানটা যখন আকাশ দিয়ে উড়ে যায়, তখন তার জানালাগুলো কতই না ছোট মনে হয়। আসলে এগুলোর সাইজ একটু্ ছোটই হয়ে থাকে। অনেকেই আকাশে ভেসে যেতে যেতে বাইরের দুনিয়াটাকে দেখতে জানালার পাশে আসন নিতে চান। মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে বাইরেটা দেখতে মন চায়। সাধারণত ৯ ইঞ্চি বাই ১২.৫ ইঞ্চিরও কম সাইজের এই জানালা দিয়ে আকাশের বিশালতার দেখা মেলে অনেকটা। আরেকটু পরিচিত বিষয় হয়তো খেয়াল করে থাকবেন। প্রতিটা জানালার ছোট্ট একটা ছিদ্র।

এই ফুটোটা কিন্তু সৌন্দর্য বৃদ্ধির উপাদান নয়। বরং আপনাকে নিরাপদ রাখতেই এই ক্ষুদ্র ছিদ্রের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।

এ সবকিছুই চাপসংশ্লিষ্ট বিষয়। ভূমি থেকে যত ওপরে আপনি উঠবেন, প্রাণবায়ু অক্সিজেনের পরিমাণ ততই কমতে থাকবে। এতে মানুষ অস্বস্তি বোধ করে এবং ঘটনা বিশেষে মৃত্যুও হতে পারে। বিশেষ করে যারা পর্বতে আরোহনে অভ্যস্ত, তারা বিষয়টি অনুভব করেন। যতই ওপরে ওঠেন, ততই হাঁপাতে হয়। অক্সিজেনের সংকট বোঝা যায়।

মাটি থেকে ৩৫ হাজার ফুট ওপরে বিশাল একটি বিমান উড়তে থাকে। সেখানে বায়ুচাপ এবং অক্সিজেন এতই কম যে, যে কেউ মারা যেতে পারেন। কাজেই বিমানের ভেতরটা বাইরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চাপপূর্ণ করতে হবে। এই ব্যবস্থা করাটা যাত্রীদের জন্য ভালো হলেও বিমানের জন্য কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বিমানকে কিছু বাতাস বা চাপ বের করে দিতে হয়। আর জানালার ছোট ছিদ্রগুলোই সেই গুরুদায়িত্ব পালন করে থাকে।

ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের পাইলট মার্ক ভ্যানহোনাকার জানান, খেয়াল করে দেখবেন এই ছোট ছিদ্রটা কিন্তু কেবল এক পরতের শক্তিশালী কাঁচ দিয়ে তৈরি হয়নি। বরং এখানে তিনটি স্তরের প্যান ব্যবহার করা হয়েছে। সবচেয়ে ভেতরের প্যানটি বাইরের দুটোকে রক্ষা করে। আকাশ আর কেবিনের চাপের ভারসাম্য রক্ষার জন্য বিশেষ নকশায় তৈরি হয় এটি।

আরেকটি কাজ রয়েছে এর। তা হলো, ভেতরের আর্দ্রতা বের করে দেওয়া। এতে করে জানালাটা ঝাপসা হয়ে বাইরের সুন্দর দৃশ্যপট উপভোগে বাধা সৃষ্টি হবে না।

সূত্র : ফক্স নিউজ