ইসির আমন্ত্রিত সুশীল প্রতিনিধিদের নিয়ে আ.লীগে অসন্তুষ্টি!

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ৩১ জুলাই সোমবার নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছে। এই সংলাপ উদ্যোগ নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন মহলে। সংলাপের আগে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি নির্বাচন তালিকায় বিএনপিপন্থী হিসেবে চিহ্নিত কয়েকজনের নাম দেখে অসন্তুষ্টি দেখা দিয়েছে আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে। তবে অসন্তুষ্টি থাকলেও কৌশলগত কারণে দলীয়ভাবে এখনই প্রতিক্রিয়া জানাতে চান না তারা। ইসির সংলাপ ইস্যুতে আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারক পর্যায়ের অন্তত একডজন নেতার সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, ইসির পক্ষ থেকে আমন্ত্রিত সুশীল সমাজের তালিকা নিয়ে দলের সিনিয়র নেতারা দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা হয়েছে। শেখ হাসিনা দলীয় নেতাদের বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য না করার নির্দেশনা দিয়েছেন। এ কারণে ইসির কার্যক্রম পছন্দ হোক বা না হোক, সে বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাবে না আওয়ামী লীগ।

ইসি ৩১ জুলাইয়ের বৈঠকের জন্যে ইতোমধ্যে ৫৯বিশিষ্ট নাগরিককে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ড. আসিফ নজরুল, টিআইবির ইফতেখারুজ্জান, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, ড. শাহদীন মালিক, বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ও সমর্থক শফিক রেহমানের স্ত্রী তালেয়া রেহমানসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে আমন্ত্রণ জানানোয় ডজনখানেক বুদ্ধিজীবীর বিষয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে অসন্তুষ্টি দেখা দিয়েছে। তাদের কেউ কেউ কট্টর সরকারবিরোধী ও বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে ইতোমধ্যেই পরিচিতি অর্জন করেছেন। এ কারণে তাদের কাছ থেকে ‘নিরপেক্ষ’ পরামর্শ পাওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারকরা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজি জাফরউল্যাহ বলেন, ‘সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইসি সংলাপের দিনক্ষণ ঠিক করেছে। আমরা চাই, আলোচনা করুক। পরামর্শ গ্রহণ করুক। তারা তাদের পছন্দমতো ডেকেছে। আমরা এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয় এখন জানাব না।’ তিনি বলেন, ‘দলীয়ভাবে বসে ঠিক করব, এ ব্যাপারে আমরা কী প্রতিক্রিয়া জানাব। আগে দেখি কী হয়?’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘এ ব্যাপারে আপাতত প্রতিক্রিয়া জানাব না।’ তিনি বলেন, ‘সুশীল সমাজ কোনও দলের হয় না। কিন্তু এখানে অনেক সুশীল রয়েছেন, যারা বিএনপির বুদ্ধিজীবী হিসেবে বেশি পরিচিত।’

সভাপতিমন্ডলীর আরেক সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন তাদের বিবেচনায় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তারা সংলাপ করুক।’

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন তাদের বিবেচনায় নির্বাচন করেছে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি। এ ব্যাপারে আপাতত কিছু বলতে চাই না।’ তিনি বলেন, ‘‘তবে আমন্ত্র্রিত সুশীল সমাজের তালিকায় অনেকের নাম দেখা গেছে, যারা সরাসরি বিএনপির হয়ে বিভিন্ন ফোরামে কথা বলেন। আরা দেখি, ‘টক শো’য় অনেকেই বিএনপির পক্ষ নিয়ে কথা বলেন।’’প্রতিবেদন বাংলা ট্রিবিউনের সৌজন্যে প্রকাশিত।