রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন

রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের আইনে সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার স্থানীয় সময় বুধবার সকালে আইনটিতে সই করেন তিনি। এ আইনের আওতায় রাশিয়ার পাশাপাশি ইরান ও উত্তর কোরিয়ার ওপরও আরোপিত নিষেধাজ্ঞার সম্প্রসারণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের বরাত দিয়ে বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।

মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ ও ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ায় রুশ সম্প্রসারণের প্রেক্ষাপটে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর আগে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের এ আইন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটে পাস হয়। তবে ক্রেমলিনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের আশা পোষণ করা ট্রাম্প এ আইনে সই করবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় ছিল।

ট্রাম্প আইনটিতে সই করবেন বলে এর আগে হোয়াইট হাউস জানিয়েছিল। কিন্তু মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন জানান, তিনি ও প্রেসিডেন্ট দুজনই আইনটির বিষয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারছেন না।

এ অবস্থায় ট্রাম্পের আইনটিতে অনুমোদন নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। অবশেষে সব সংশয় কাটিয়ে ২ আগস্ট প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আইনটিতে সই করেছেন বলে বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন হোয়াইট হাউসের দুই কর্মকর্তা। তবে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি এখনো দেওয়া হয়নি।

নতুন আইনের মাধ্যমে রাশিয়ার ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা অপসারণে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার সংকোচন করা হয়েছে। এখন কংগ্রেসের অনুমোদন ব্যতীত প্রেসিডেন্টের পক্ষে রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা সম্ভব হবে না।

এদিকে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে রাশিয়া থেকে ৭৫৫ মার্কিন কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হবে বলে আগে থেকেই হুঁশিয়ার করেছিল ক্রেমলিন। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে নিজের মেয়াদের শেষ মুহূর্তে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আমেরিকা থেকে ৩৫ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছিলেন। একই সঙ্গে আমেরিকায় দুটি রুশ স্থাপনাও বন্ধ করে দিয়েছিল ওবামা প্রশাসন।

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর এ ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের ইতিবাচক পদক্ষেপ আশা করেছিল রাশিয়া। কিন্তু মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর রাশিয়া প্রশ্নে চাপ বাড়ে, যা জি-২০ সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের গোপন বৈঠকের সূত্রে আরও বাড়ে। সর্বশেষ গত বছর মার্কিন নির্বাচনী প্রচারণাকালে রুশ আইনজীবীর সঙ্গে ট্রাম্প-পুত্রের বৈঠকের বিষয়টি প্রকাশ হলে এ-বিষয়ক সমালোচনা তীব্র রূপ ধারণ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা খর্ব ও রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে একটি আইন উত্থাপন করা হয়েছিল।

আইনটি পাসের পর রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম সিএনএনকে বলেন, আইনটির বিষয়ে ট্রাম্পের হাতে তেমন কোনো বিকল্প ছিল না। কারণ প্রেসিডেন্টের ভেটো এড়িয়ে আইনটি পাস করার যথেষ্ট ভোট কংগ্রেসে ছিল। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন এমন কিছু করেছেন, যা কোনো আমেরিকানের পক্ষে করা সম্ভব ছিল না। তিনি মার্কিন কংগ্রেসকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় সহায়তা করেছেন।

এ বিষয়ক এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রুশ পার্লামেন্টের সদস্য কনস্টানটিন কোসাচেভ বলেন, কংগ্রেসের মুখোমুখি না দাঁড়িয়ে ট্রাম্প ‘আত্মসমর্পণ’ করেছেন।