বিষধর সাপের ছোবল খেয়েছেন ৩৮৮৩ বার! তাও বার বার সাপের মুখোমুখি হন ইনি

”বাড়িতে সাপ ঢুকেছে। তাড়াতাড়ি ভাভা সুরেশকে খবর দাও।” কেরলের তিরুবনন্তপুরমের কোনও বাড়িতে সাপ ঢুকলেই সকলে বলে ওঠেন এ কথা। সঙ্গে সঙ্গে সাপ ধরতে সেখানে হাজির হন সুরেশ। এলাকায় ‘ভাভা সুরেশ’ নামেই পরিচিত তিনি।

বহুবার ভয়ানক সাপের ফণার সামনে দাঁড়িয়ে তাদের অনায়াসে বাগে এনেছেন। যে সাপগুলি ধারেকাছে আসলেই ভয়ে হাড়হিম হয়ে যায়, সেই সাপগুলির চোখে চোখ রেখে একে একে পাকড়াও করেছেন সুরেশ। এই সাপেদের মধ্যে রয়েছে কেউটে, গোখরো, কিং কোবরা। শুধু বিষধর সাপই নয়, অন্যান্য বিষধর সরীসৃপও ধরেছেন তিনি।

সুরেশের ফেসবুক পেজ থেকে জানা গিয়েছে, এরই মধ্যে ১১৩টিরও বেশি কিং কোবরা ধরেছেন তিনি। এটাই সুরেশের পেশা। তাই জীবনের ঝুঁকি থাকলেও সাপের ফণার সামনে নির্ভয়ে দাঁড়াতে হয় ৪২ বছরের ভাভা সুরেশকে।

সাপ ধরতে গিয়ে প্রায় ৩৮৮৩ বার ছোবল খেয়েছেন তিনি, তাও বার বার সাপের মুখোমুখি হন ইনি । আর তার মধ্যে ৩৮৭ বার বিষধর সাপ কামড়েছে তাঁকে। ২৮ বছরের এই কর্মজীবনে বহুবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও বারবার বেঁচে গিয়েছেন এলাকার মানুষের আশীর্বাদে। এমনই মনে করেন ভাভা সুরেশ।

স্কুল জীবন থেকেই সাপ ধরা শুরু করেন সুরেশ। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি বলেন, ”আমার ধরা প্রথম সাপ ছিল গোখরো। তখন শুধু কৌতূহলের বশেই সাপ ধরতাম। স্কুল থেকে ফেরার সময়ে নদীর ধারে একটি সাপ দেখতে পাই তখন সাপটিকে ধরে ঘরে নিয়ে যাই। বাড়ির লোকেরা দেখেই ভয়ে চিত্‍কার শুরু করে দেন। তখনই সাপের বিষয়ে আমার কৌতূহল আরও বেড়ে যায়।”

এই কৌতূহলের জেরেই সারা কেরল থেকে বিভিন্ন ধরনে বিষধর সাপ উদ্ধার করেছেন ভাভা সুরেশ। এক এক দিন ৭-৮ ঘণ্টা লেগে যায় সাপ ধরতে। সাপগুলিকে যদিও আবার জঙ্গলে ছেড়ে দেন তিনি। এমন জায়গায় ছাড়েন, যাতে লোকালয়ে আর সাপটি না চলে আসে।

এক এক দিনে, সারা রাজ্য থেকে প্রায় ২০০-রও বেশি খবর আসে তাঁর কাছে। তবে শুধু সাপ ধরাই নয়, বিভিন্ন সেমিনারে সাপ নিয়ে মানুষকে সচেতনও করেন তিনি। সাপের বিষ নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ”সাপের বিষকে যতটা বিষাক্ত মনে করা হয়, ততটা তা নয়। বরং এর ৯৫ শতাংশ হল প্রোটিন। একমাত্র রক্তে পৌঁছলেই সাপের কামড়ে বিষক্রিয়া হয়।” -এবেলা