ডিমলায় ভারীবর্ষন ও উজানের ঢলে তিস্তার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
হামিদা আক্তার, নীলফামারী থেকে : উজানের ঢলে ও টানা তিন দিনের ভারী বর্ষনে নীলফামারীর ডিমলায় ১০ টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের প্রায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে হটাৎ টানা ভারীবর্ষনসহ অব্যাহত বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ।
এদিকে তিস্তার পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা ব্যারাজের উজানে পানির প্রবাহ বাড়ছে ক্রমাগত। ফলে প্লাবিত হয়েছে তিস্তার ঝাড় শিংহেরশ্বর চর, কিসামতের চর, দোহলপাড়া, ফকোতের চর, বাঘের চর, একতার বাজার চর, দ: খড়িবাড়ী বাড়ী , উ: খড়িবাড়ী , ছোটখাতা, বাইশ পুকুর, ছাতুনামার চরসহ তিস্তার অববাহিকায় নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলি।
শনিবার ব্যারাজের উজানে খালিশা চাপানী ইউপি’র ছোটখাতা ও টেপাখড়িবাড়ী ইউপি’র উ: খড়িবাড়ী গ্রামের গিয়ে দেখা যায়, তিস্তার পানিতে প্লাবিত হয়ে এখনও পানিবন্দি রয়েছেন অন্তত ৫ সহস্রাধিক পরিবার। তিস্তার ভাঁঙ্গনের কবলে পরে তিস্তার ডাঁনতীরে স্বপন বাঁধটি বিলীন হয়েছে নদীগর্ভে। বাঁধটি বিলীণ হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার। নদীগর্ভে চলে হেছে ১০ টি পরিবারের বসতভিটা ও বাড়ীঘর। গত ৪ দিন ধরে টানা অব্যাহত বৃষ্টিপাতের ফলে পানিবন্দি গ্রামে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। টিউবয়েল ও লেট্রিনগুলি তলিয়ে গেছে পানিতে। ফলে আমাশয় ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে অনেকেই। পানিবন্দি গৃহবধুঁদের দেখা গেছে চৌকির উপর চুলা বসিয়ে রান্না করতে। প্লাবিত গ্রামগুলিতে স্বাস্থ্য বিভাগ জরুরী স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখা হয়েছে। ভ্রাম্যমান স্বাস্থ্য ক্যাম্প বসিয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবাসহ পানি বিসুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও খাবার সেলাইন সরবারহ করছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। গতকাল শনিবার ছোটখাতা গ্রামের চৌরাস্তার মোড়ে জরুরী স্বাস্থ্য সেবা ক্যাম্পে নীলফামারীর সিভিল সার্জন ডাঃ রঞ্জিত বর্মন উপস্থিত থেকে ওর স্যালাইন ও পানি বিসুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করেন প্লাবিত অঞ্চলের মানুষের মাঝে। এ সময় তিনি বলেন, প্লাবিত গ্রামগুলিতে জরুরী স্বাস্থ্য সেবা চালু রাখা হবে। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডাঃ সারোয়ার আলম ও স্বাস্থ্য পরিদর্শক লোকমান আলীসহ স্বাস্থ্যকর্মীগন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পপ কর্মকর্তা ডাঃ সারোয়ার আলম বলেন, প্লাবিত অঞ্চলগুলিতে আমাদের স্বাস্থ্য কর্মী জরুরী স্বাস্থ্য সেবায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। চালু রাখা হয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক। টেপাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জানান, স্বপন বাঁধটির প্রায় ১ হাজার মিটার নদীগর্ভে চলে গেছে। ফলে ২ হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ব্যারাজের সব ক’টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে যাতে তিস্তার পানিতে প্লাবিত গ্রামগুলি থেকে দ্রুত পানি নেমে যেতে পারে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন