‘এস কে সিনহার সঙ্গে কাদেরের সাক্ষাতে বিএনপি বিস্মিত, শঙ্কিত’

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নৈশভোজে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের যোগ দেয়ার খবরে উদ্বেগ ও শঙ্কা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, ‘গতকাল রাতে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা’র বাসায় গিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং সেখানে তিনি নৈশভোজনে অংশ নিয়েছেন। এতে আমরা বিস্মিত হয়েছি। কারণ ইতোমধ্যে এরাই (আওয়ামী লীগ) প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে সন্ত্রাস ও সংঘাতের ভাষায় কথা বলেছেন।’

রবিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ছাত্রদল আয়োজিত দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে ফখরুল এসব কথা বলেন। লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় এই মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে সম্প্রতি সরকারি দল ও আওয়ামী লীগের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা এই রায় নিয়ে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়েছেন। এর মধ্যে গতকাল শনিবার রাতে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে নৈশভোজে ওবায়দুল কাদের অংশ নেন বলে গণমাধ্যমে খবর আসে। এই সাক্ষাতে ওবায়দুল কাদের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে একান্তে কথা বলেন। তবে তাদের মধ্যে কী কথা হয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

রায় নিয়ে আলাদতের বিরুদ্ধে সরকারের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ষোড়শ সংশোধনীর রায় পরিবর্তনের জন্য বিচারপতি ও বিচার বিভাগের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। সরকার ও আওয়ামী লীগের নেতারা প্রধান বিচারপতি এবং বিচার বিভাগ সম্পর্কে যেভাবে কথা বলছেন সেটা কোনো রাজনৈতিক ভাষা নয়। গণতান্ত্রিক ভাষাও নয়। এ ভাষা হচ্ছে সন্ত্রাস ও সহিংস। অবশ্য এই ভাষায় কথা বলা তাদের চরিত্রও বটে।’

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিচার বিভাগের ওপর চাপ প্রয়োগ না করে রাজপথে আসুন। বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করুন। ক্ষমতার চেয়ারে বসে এবং চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী রেখে অনেক কথা বলা যায়। ক্ষমতা ছেড়ে নেমে আসুন দেখুন দেশের জনগণ কাদের পাশে দাঁড়ায়?’

খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া নিয়ে সরকারি দলের নেতাদের বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। কারণ খালেদা জিয়া কারো সঙ্গে আপস করেন না।’

বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে সরকার নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এ থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তবে এখনই সময় এই ভোটারবিহীন স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করার, মুখ খোলার।’

ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসানের সভাপতিত্বে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল অংশ নেন।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টুর সঞ্চালনায় দোয়ায় ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সবশেষ খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় মোনাজাত করা হয়।