ঢাকায় মনিটরিং নয়, বন্যাদুর্গত এলাকায় যেতে নির্দেশ খালেদার
ঢাকায় বসে মনিটরিং না করে দেশের বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। লন্ডনে চিকিৎসাধীন বিএনপি-প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের মাধ্যমে টেলিফোনে এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
দলের দায়িত্বশীল একটি সূত্রে জানা গেছে, বন্যাদুর্গত এলাকায় সশরীরে উপস্থিত থাকার জন্য খালেদা জিয়া টেলিফোনে নির্দেশনা দিয়েছেন। বলেছেন, ঢাকায় না থেকে সবাইকে এলাকায় যেতে হবে। সেখানে সাধ্যমতো বন্যাদুর্গত মানুষকে সহায়তা করতে হবে।
ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় ও সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতাদের দলের দপ্তর থেকে চেয়ারপারসনের এই নির্দেশনার কথা টেলিফোনে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, অবশ্যই নেতাদের দুর্গত এলাকায় উপস্থিত থাকতে হবে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, নেত্রকোণা, সিলেট, সুনামগঞ্জ, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটিসহ ২০ জেলার ৩৫৬টি উপজেলার ৩৫৮টি ইউনিয়ন দ্বিতীয় দফার এই বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ছয় লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত কয়েক দিনের বন্যায় মারা গেছে প্রায় ৪০ জন। এর মধ্যে দিনাজপুরে ১৩ জন, কুড়িগ্রামে ১১ এবং লালমনিরহাটে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এবার বর্ষা মৌসুমে মধ্য জুলাইয়ে প্রায় একডজন জেলায় বন্যার বিস্তার ঘটলে সাড়ে ছয় লাখ লোক পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। কিন্তু গত কয়েক দিনে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে নতুন করে ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে ২গ জেলা। সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এবারের এ বন্যা ১৯৮৮ সালের বন্যার ভয়াবহতাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।
সরকারের পক্ষ থেকেও বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে জানানো হয়, বন্যা মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি রয়েছে। ইতিমধ্যে বন্যাদু্র্গত এলাকায় সরকারের ত্রাণ তৎপরতার কথাও জানা গেছে।
তবে বিএনপি বলছে, সরকার যে ত্রাণ তৎপরতা চালঅচ্ছে তা পর্যাপ্ত নয়। তাই দলের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীসহ বিত্তবানদের দুর্গত এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইতিমধ্যে ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুরে দলের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করেছেন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া নেতাদের দ্রুত এলাকায় যেতে বলেছেন। কেউ যেন ঢাকায় বসে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম মনিটরিং না করেন সেজন্যও নির্দেশ দিয়ছেন। বলেছেন, সবাইকে এলাকায় যেতে হবে।
গত ১৫ জুলাই থেকে লন্ডনে আছেন বেগম খালেদা জিয়া। চোখ এবং হাঁটুর চিকিৎসার জন্য তিনি সেখানে আছেন। ইতিমধ্যে এক চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে। মোটামুটি ভালো আছেন বলে দল থেকে বলা হয়েছে।
এদিকে বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে এবার ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে কোনো আনুষ্ঠানিকতা করেনি দলটি। বলা হয়েছে, বন্যাকবলিত মানুষের কথা চিন্তা করে এবং চেয়ারপারসন বিদেশে চিকিৎসাধীন থাকায় কোনো আনুষ্ঠানিকতা করা হয়নি। তবে এ উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ঢাকাটাইমসকে চেয়ারপারসনের নির্দেশনার কথা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা সংশ্লিষ্ট এলাকার এবং বন্যাকবলিত এলাকার যারা কেন্দ্রীয় নেতা আছেন, তাদের জানিয়েছি চেয়ারপারসনের নির্দেশনা।’
বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খানও এ কথা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘চেয়ারপারসন সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতাদের সশরীরে উপস্থিত থেকে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। কোন নেতা কোথায় দায়িত্ব পালন করবেন কেন্দ্রীয় দপ্তর এটা সমন্বয় করবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন