বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে প্রথমবারের মতো যৌথ টহল
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে যৌথ টহল কোনও নতুন ঘটনা না হলেও বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে এই প্রথম চালু হলো যৌথ টহল। উভয় দেশের দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনী— বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) গত তিন দিনে ওই সীমান্তে দুইবার যৌথ টহল দিয়েছে। সীমান্তে এই যৌথ টহল অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন টেকনাফে বিজিবি ব্যাটালিয়ন-২-এর কমান্ডার লে. কর্নেল আরিফুল ইসলাম।খবর বাংলা ট্রিবিউনের।
গত রবিবার (১৩ আগস্ট) ও বুধবার (১৬ আগস্ট) জিরো লাইনে এই যৌথ টহল হয়। ঘুমঘুম সীমান্ত থেকে উত্তরের সীমান্তে এই যৌথ টহল চলে। বর্ডার ম্যানেজমেন্টের অংশ হিসবে এই যৌথ টহল দেওয়া হয় ৩১ নম্বর পিলারের ওপরের দিকে, ৩২ নম্বর পিলার পর্যন্ত। টংডু সীমান্তেও এই যৌথ টহল হয়। রবিবার টহলের শুরুতে বিজিবি ও বিজিপি সদস্যরা নিজ নিজ বাহিনীর পতাকা নিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ২০১০ সালে যৌথ সীমান্ত টহলের স্মারক সই হয়। ইন্ডিয়া বাংলাদেশ কো-অর্ডিনেটেড বর্ডার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানের আওতায় এই যৌথ টহলের ব্যবস্থা হয়। কিন্তু মিয়ানমারে সঙ্গে বাংলাদেশের এ ধরনের কোনও সমঝোতা না থাকলেও মাস দেড়েক আগে এক ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে যৌথ টহলের প্রস্তাব করেন লে. কর্নেল আরিফুল ইসলাম। তিনি জানান, ‘এরপর আরও কিছু অফিসিয়াল যোগাযোগের পর যৌথ টহলের ব্যাপারে মিয়ানমার সম্মত হয়।’
লে. কর্নেল আরিফুল আরও জানান, ‘যৌথ টহলের সময় দুই দেশের সীমান্তরক্ষীরা জিরো লাইনে যার যার অংশে অবস্থান করে টহল দেয়। টহলের সময় আলোচনা হয়, তথ্য বিনিময়ও হয়। চাইলে এক দেশের সীমান্তরক্ষীরা তখন আরেক দেশের মধ্যে প্রবেশও করতে পারে।’
বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে মোট সীমান্ত ১২০ কি.মি.। এর মধ্যে নৌ ও স্থল— উভয় ধরনের সীমান্ত আছে। আরিফুল ইসলাম তার কমান্ডিংয়ের আওতায় এই যৌথ টহলের ব্যবস্থা করলেও অন্য অংশে হবে কিনা তা সেই এলাকার কমান্ডাররা সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে যৌথ টহল পুরো সীমান্তে চালু হলে মাদক চোরাচালান বিশেষ করে ইয়াবা পাচার কমে আসবে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আবারও সামরিক অভিযান শুরু হওয়ায় সেখান থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসছে বলে খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা দাবি করছেন, গত কয়েকদিনে কমপক্ষে এক হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের নাইখ্যংছড়ি সীমান্তের ঘুম ঘুম ইউনিয়নের কমরু এলাকা দিয়ে প্রবেশ করেছে। তারা বালুখালী, কুতুপালং ও ঘুমঘুম অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নিচ্ছেন।
লে. কর্নেল আরিফুল ইসলাম জানান, ‘এই যৌথ টহল উভয় দেশের জন্য ইতিবাচক। আমরা মিয়ানমারকে রাজি করাতে পেরেছি, এর মানে হল সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় তাদের সদিচ্ছা আছে। তাদের ভেতরে কী তার প্রভাব যাতে সীমান্তে না পড়ে এজন্য যৌথ টহল কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’
তিনি আরও জানান,‘আমার সীমান্ত এলাকা দিয়ে কোনও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা এখনও ঘটেনি। মিয়ামনমারের রাখাইন প্রদেশে সেনা সমাবেশের গোয়েন্দা তথ্য আমাদের কাছে আছে। তাই সীমান্তে আমরা সার্ভিলেন্স বাড়িয়েছি।’
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে এই যৌথ টহল আরও হবে। এটাকে নিয়মিত করতে চান লে. কর্নেল আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন,‘ যৌথ টহল যত বাড়বে তত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা সহজ এবং স্বচ্ছ হবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন