যে কারণে তারেক রহমান আসামী
বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সব ধরণের সাহায্য ও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন তারেক রহমান।
নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নান (পরে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের উপর গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত) আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা জানিয়েছে।
২০০৮ সালের ১ নভেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মুফতি হান্নান জবানবন্দি দেয়।
সন্ত্রাসবিরোধী জনসমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যার নীলনকশা সাজানো হয়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বহুল আলোচিত ‘হাওয়া ভবনে’, এমনটাই মুফতি হান্নানের জবানবন্দিতে প্রকাশ পায়। ওই গ্রেনেড হামলায় বিএনপির বর্তমান সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ মদদ ছিল বলেও জানায় হান্নান।
মুফতি হান্নানের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালের শুরুরদিকে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হুজির অফিস দারুল আরকান মাদ্রাসায় একটি মিটিংয়ে উপস্থিত ছিল আমির আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, আবু বক্কর, মাওলানা ইয়াহিয়া ও জান্দাল। মিটিংয়ে কীভাবে তারেক রহমান ও বাবরের সঙ্গে কথা বলা যায় সে আলোচনা হয়।
পরে মোহাম্মদপুর সাতমসজিদে মাওলানা আবদুস সালাম, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা তাজউদ্দিন, কাশ্মীরী নাগরিক আবদুল মাজেদ ভাটসহ একসঙ্গে পরামর্শ করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। মাওলানা তাজউদ্দিন গ্রেনেড সরবরাহ করার দায়িত্ব নেয়।
‘তাজ ভাই বলেন, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু ও প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর আমাদের সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছেন। তারেক রহমানের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর একদিন মুরাদনগরের এমপি কায়কোবাদ সাহেব আমাদের হাওয়া ভবনে নিয়ে গিয়ে তারেক রহমান ও হারিছ চৌধুরী সাহেবের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। আমরা আমাদের কাজকর্মের জন্য তাদের সাহায্য ও সহযোগিতা চাইলে তারেক রহমান সর্বপ্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দেন,’ বলে জানায় জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান।
মুফতি হান্নানের জবানবন্দি থেকে আরো জানা যায়, ২০০৪ সালের আগস্ট মাসে সিলেটে গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে ঢাকার মুক্তাঙ্গনে আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সভার সংবাদ জানার পর সেখানে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের ওপর আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পুনরায় তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত হয়।
মুফতি হান্নান, মাওলানা আবু তাহের, শেখ ফরিদ, মাওলানা তাজউদ্দিন, মাওলানা রশিদসহ আল মারকাজুলের গাড়িতে করে হাওয়া ভবনে যায়। সেখানে হারিছ চৌধুরী, লুৎফুজ্জামান বাবর, জামায়াতে ইসলামের আলী আহসান মুজাহিদ, ব্রিগেডিয়ার রেজ্জাকুল হায়দার, ব্রিগেডিয়ার আবদুর রহিমও উপস্থিত ছিল। কিছুক্ষণ পর তারেক রহমান আসেন। তখন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের ওপর হামলার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তাদের সহায়তা চাওয়া হয়। তখন তারা সকল প্রকার প্রশাসনের সহায়তার আশ্বাস দেয়।
‘তারেক রহমান জানান, আপনাদের এখানে আর আসার দরকার নাই। আপনারা বাবর সাহেব ও আবদুস সালাম পিন্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজ করবেন। তারা আপনাদের সকল প্রকার সহায়তা করবেন,’ বলে তারেককে উদ্ধৃত করে জানায় হান্নান।
সে অনুযায়ী জান্দাল ও কাজল ২০ আগস্ট আবদুস সালাম পিন্টুর বাসা থেকে ১৫টি গ্রেনেড ২০ হাজার টাকা গ্রহণ করে বাড্ডার বাসায় নিয়ে আসে। পরদিন ২১ আগস্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন